শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নেই নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক, সবাই স্বতন্ত্র

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২১
  • ২৭৩ বার পঠিত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নেই নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক, সবাই স্বতন্ত্র
ফাইল ফটো
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা :ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে চেয়ারম্যন চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সাধারণ সদস্যপদে ২৭২ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এ উপজেলার ৫ ইউনিয়নের নির্বাচন।তবে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা পাড়া মহল্লায় কর্মী সমর্থন নিয়ে সভাসমাবেশ গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। হাটবাজার দোকনপাটসহ সর্বত্র চলছে প্রার্থী ও তাদের আমল নানা নিয়ে বিশ্লেষণও।
এ উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে থাকছে না নৌকা আর ধানের শীষ প্রতীক। চেয়ারম্যান পদে অংশ গ্রহনকারীরা সবাই স্বতন্ত্র প্রতীকে তারা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন।

সারা দেশে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক নিয়ে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় রয়েছে অনেকটাই ব্যতিক্রম। আসন্ন ৪র্থ দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ কোনো প্রার্থীকে দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক গত সপÍাহে আওয়ামীলীগের এক বর্ধিত সভায় তিনি ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ কাউকে বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন । মন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তকে প্রার্থীসহ নেতাকর্মীরা স্বাগত জানায়। ফলে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তাছাড়া বিএনপি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তনুযায়ী দলীয়ভাবে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তবে চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে এ দলটি। দলের নেতাকর্মীরা তাদের খোলস পাল্টে ব্যক্তি ইমেজ কিংবা গ্রামের সমর্থনে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ফলে বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করায় ধানের প্রতীক ছাড়াই ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী হিসেবে তারা নির্বাচন করছেন।

এছাড়া এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কোন নেতাকর্মী নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে তাদের নাম শোনা যায়নি। সেই সাথে কোন প্রার্থী শেষ পযর্ন্ত মনোনয়নপত্র ও দাখিল করেনি। ফলে চেয়রম্যান পদে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নির্বাচনে অংশ গ্রহনকারীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তারা লড়বেন।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সাধারণ সদস্যপদে ২৭২ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে উত্তর ইউপিতে রয়েছে ৫ জন, আখাউড়া সদর দক্ষিণ ৩ জন, মোগড়া ৭ জন, মনিয়ন্দ ৭ জন ও ধরখার ইউনিয়নে ১৬ জন রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাই প্রার্থী বেশী রয়েছে।

উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান, যুবলীগ নেতা ও প্রার্থী মো. জালাল উদ্দিন বলেন, এ ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ বরাদ্দ না দেওয়ায় দলের জন্য খুবই ভালো হয়েছে। তিনি বলেন গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থীত একজন প্রার্থী হয়ে অংশ গ্রহন করলে এলাকার লোকজন আমাকে স্বত:স্ফুর্ত ভাবে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে। আমি নির্বাচিত হয়ে চেষ্টা করেছি জনগনের কল্যাণে কাজ করতে। আমার বিশ্বাস এবারও জনগন আমাকে সেইভাবে ভোট দিয়ে করে জয়যুক্ত করবে। তিনি আরও বলেন মাননীয় মন্ত্রী দলের স্বার্থে যে সিদ্ধন্ত দিয়েছেন এতে আমি খুবই খুশি। আমি এ সিদ্ধান্ততে স্বাগত জানাই। এতে করে তৃণমুল মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ তৈরী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। মোগড়া ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল মতিন বলেন , এ ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ বরাদ্দ না দেওয়া মাননীয় মন্ত্রীকে স্বাগত জানাই। আমি দীর্ঘ দিন ধরে এলাকার মানুষের সুখে দু:খে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আমি জনকল্যাণে কাজ করতে চাই। এজন্য চাই সকলের দোয়া ও সমর্থন। আমি নির্বাচিত হলে ইউনয়িন পরষিদে একজন মানুষও তাদরে ন্যায্য অধকিার থকেে বঞ্চতি হবে না। মাদক সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত একটি সুন্দর আদর্শ ইউনয়িন গড়বেন বলে জানায়।

উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন আব্দুল বলেন, ইউনিয়ন নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে কেন্দ্রীয় কোনো নির্দেশনা না আসায় আমরা অংশ গ্রহন করেনি। তাছাড়া দলের যে সমস্ত লোকজন প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন এতে দলের কোন সমর্থন নেই। তারা ব্যক্তিগত ভাবে ও নিজেদের ইমেজে প্রার্থী হয়েছে। এতে আমাদের কিছু করার নেই।

উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল বলেন, জনগণ যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ নির্বাচনে কোন কারচুপি করার সুযোগ নেই।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জাসিদুল ইসলাম জানান, আগামী ২৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাচাই করা হবে ও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ ডিসেম্বর। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং অবাধ নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন উপহার দিতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com