রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন

১৫ লাখ টাকা যৌতুক দেয়ার পরও রেহাই মেলেনি গৃহবধূ দিপালী বেগমের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২৮৫ বার পঠিত

কয়েক দফায় ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দেয়ার পরও রেহাই মেলেনি গৃহবধূ দিপালী বেগমের (৩৫)। সর্বশেষ চার লাখ টাকার যৌতুক দাবি মেটাতে না পারায় স্বামী রকিবুল গাজীর (৪০) হাতুড়ির আঘাতে মাথার খুলি ফেটে মগজ বের হয়ে গেলে প্রাণ হারায় এ গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) এমন নৃশংস ঘটনার পর পালিয়ে গিয়ে বোনের বাসায় আশ্রয় নেয় স্বামী রকিবুল।

এ ঘটনায় জানতে পেরে তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডির)। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমাদের জালে ধরা পড়ে সে। বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে সাভারের ধামসোনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডির রাজধানী মালিবাগের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তদন্ত সংস্থাটির এলাআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ছয় বছর আগে দিপালী বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় রকিবুল গাজীর। বিয়ের সময় রকিবুল যৌতুক হিসেবে নগদ পাঁচ লাখ টাকা নেয়। কিছুদিন পর আবার ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। কিন্তু ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা তা দিতে অস্বীকার করে। এরপর থেকে ভিকটিমের ওপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। নিহতের মা তা জানতে পেরে বসতবাড়ি বিক্রি করে ১০ দশ লাখ টাকা যৌতুক দেয়। ওই টাকা দিয়ে রকিবুল বাড়ি, ফার্নিচারের দোকান ও কাঠের ডিজাইনের মেশিন কিনে ব্যবসা শুরু করে। এরপর সম্প্রতি সে পুনরায় আরো ৪ লাখ টাকা দাবি করে।

এই টাকা আদায়ের জন্য ভিকটিমের ওপর পুনরায় নির্যাতন শুরু হলে ভিকটিমের মা বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য মেয়ের বাড়িতে যায়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কলহের জের ধরে রকিবুল দিপালীর মায়ের সামনে হাতুড়ি দিয়ে দিপালীকে মাথায় আঘাত করলে মাথার খুলি ফেটে মগজ বের হয়ে যায়। আশেপাশের মানুষ চিকিৎসার জন্য পল্লী চিকিৎসককে ডেকে আনলে সে জানায় যে, দিপালী মৃত্যুবরণ করেছে। গত ২ সেপ্টেম্বর নড়াইলের কালিয়া থানাধীন উড়শী গ্রামে এ লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি গণমাধ্যমে আসার পর ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা তদন্ত শুরু করলে স্বামী রকিবুলকে গ্রেপ্তারে সমর্থ হই।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, এছাড়া, জামালপুরের মেলান্দহ এলাকায় পরকীয়া প্রেমের জেরে স্ত্রীকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার অন্য এক ঘটনায় স্বামী মো. রুবেল মিয়াকে (৪২) একইদিন গ্রেপ্তার করে এলআইসি শাখার অপর একটি দল। প্রায় ২ বছর আগে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করেন নিহত মোসলিমা আক্তার ময়না (৩৮) ও মো. রুবেল মিয়া (৪২)। বিয়ের পর থেকে রুবেল শ্বশুর বাড়িতে ঘর জামাই হিসেবে অবস্থান করে এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করে আসছিল। গত ২০ আগস্ট রাতে পরিকল্পনা করে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে রুবেল। হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঘাতক রুবেল অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপন করে।

এই ঘটনা সংঘঠিত হওয়ার পর সিআইডি ও স্থানীয় পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করে। সিআইডিএ এলআইসি’র একটি চৌকস টিম ঢাকার ডেমরা থানাধীন ইসলামবাগ, বাশেরপুল এলাকা থেকে মামলার একমাত্র এজাহারনামীয় আসামি রুবেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি স্বীকার করে যে, অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ওই সম্পর্কের কথা তার স্ত্রী জানতে পারলে প্রায়শই তার সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হতো। এ দাম্পত্য কলহের কারণেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে এই হত্যাকাণ্ড সংঘঠন করে রুবেল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com