বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক: ৫ ক্যারেট আম চুরির অভিযোগে কথিত আদালত বসিয়ে ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়ীয়া ইউনিয়নের মান্নুমোড় আম সমিতির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ৪ কিশোরকে ২লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার রায় দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ও কথিত আদালতের বিচারক সূত্রে জানা গেছে, ১৬ জুলাই রাতে মান্নুমোড় পল্লী বিদ্যুৎ পাওয়ার হাউসের পিছনে মোঃ কালুর আম বাগানে মিরপুর গ্রামের মোঃ রিপন আলীর ছেলে মোঃ মাহফুজ (১৬), মোঃ মামুনের ছেলে মোঃ সম্রাট(১৪), দূর্গাপুর গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমানের ছেলে মোঃ ইয়াকুব (১৯) ও শিবগঞ্জ উপজেলার ঠুটাপাড়া গ্রামের মোঃ মজিবুর রহমানের ছেলে মোঃ মুজাহিদ (১৩) কে ৫ ক্যারেট আম চুরির দায়ে আম বাগান মালিক মোঃ কালু আটক করেন। পরে দড়ি দিয়ে বেঁধে মান্নুমোড়স্থ মান্নুমোড় আম সমিতিতে আটকে রাখা হয়।
১৭ জুলাই রাতে মান্নুমোড় আম সমিতি কথিত আদালত বসিয়ে সমিতির সদস্য মোঃ রুস্তম আলী হাজীকে প্রধান বিচারপতি বানিয়ে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার ইব্রাহিম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল খালেক, মোঃ গাজলুসহ অন্যরা সহকারী বিচারক হয়ে মান্নুমোড় সংলগ্ন আব্দুল কুদ্দুসের আমবাগানে রাত ১০/১১ টার দিকে ৪ কিশোরের ৫ ক্যারেট আম চুরির দায়ে ২লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় ঘোষণা দেন। রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক দুজনের কাছ থেকে ১০ হাজার করে ২০ হাজার টাকা আদায় করা হয়।
এব্যাপারে কথিত বিচারক মোঃ ইব্রাহিম ও গাজলু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং বলেন, এটা নিয়ম পূর্ব প্রচলিত। এরপূর্বেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে কিশোর মোঃ মাহফুজ বলেন, চুরির দায়ে আমাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। বাঁকী টাকা ১০ দিনের মধ্যে দেয়ার সময় নিয়েছি বলে জানান। তিনি বলেন, দুজনের গার্জেন বিচারকদের ডাকে সাড়া না দেয়ায় পিছনে হাত করে দড়ি দিয়ে বেঁধে রোদে বসিয়ে রাখা হয়।
এদিকে মোঃ ইয়াকুবের সাথে যোগাযোগ করা হলে, সে জানায় আমি আম চুরি করিনি। যারা আম চুরি করেছে তারা আমার কাছ থেকে ৫টি ক্যারেট নিয়ে যাওয়া আমার অপরাধ। সে জানায়, আমাকে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাত বেঁধে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিয়েছে। আমাকে হাত বেঁধে রোদে বসিয়ে শাস্তি দিয়েছে এবং ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে বাঁকী টাকা দশ দিনের মধ্যে দেয়ার সময় নেয়া হয়েছে বলে জানায়।
আইন হাতে তুলে নিয়ে কথিত আদালত বসিয়ে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাঁরা কিশোরের উপর নির্যাতন করায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সচেতন মহলের দাবী আইন আইনের গতি চলবে।