নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিপিএল আয়োজনের সুযোগ নেই, কিন্তু দীর্ঘ বিরতির পর দেশের মাটিতে ক্রিকেট ফেরাতে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টির আবির্ভাব। এই টুর্নামেন্ট এতটাই সফল ও সম্ভাবনার এত দুয়ার খুলে দিয়েছে যে, এই টুর্নামেন্টকে এখন স্থায়ী রূপ দেওয়ার ডাক উঠছে।
বিপিএল ছাড়াও শুধু দেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে আরেকটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের প্রয়োজনীয়তা দেশের ক্রিকেটে অনুভব হচ্ছে অনেক দিন থেকেই। বিপিএলে একাদশে বিদেশি ক্রিকেটার থাকেন চার জন করে, এমনকি পাঁচ জনও ছিল। সঙ্গে দেশের প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটাররা তো আছেনই। যার ফলে অখ্যাত সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারদের জন্য বিপিএলে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ সামান্য। এই সংস্করণের উপযোগী ক্রিকেটার বের করে আনতে আরেকটি নিয়মিত টুর্নামেন্টের বিকল্প তাই নেই।
বাংলাদেশে গত বছর অবশ্য ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি হয়েছিল। তবে সেটি ছিল ছোট্ট পরিসরে। এবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ পরিপূর্ণভাবেই ফুটিয়ে তুলল এমন একটি টুর্নামেন্টের উপযোগীতা। টুর্নামেন্টটি কেমন হওয়া উচিত, সেটির একটি রূপরেখাও মিলে গেল কোভিড পরিস্থিতির আসর থেকেই।
টুর্নামেন্টের গোটা আসর জুড়েই নবীণ-প্রবীণ ক্রিকেটারদের নজরকাড়া পারফরম্যান্সে মুগ্ধ সবাইই। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের নবীণ পেসার শরিফুল ইসলামের দারুণ বোলিং কিংবা ফরচুন বরিশালের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ হোসেন ইমনদের পারফরম্যান্স জাতীয় দলের ভবিষ্যতকে নিরাপদ করে তুলেছে।
এছাড়াও প্রবীণদের খেলাও যথেষ্ট সন্তোষজনক ছিলো। তাসকিন আহমেদের ফর্মে ফেরা কিংবা মাশরাফি বিন মুর্তজার অভাবনীয় প্রত্যাবর্তন ছিলো দৃষ্টিনন্দন। এছাড়া ১০ ম্যাচে সর্বোচ্চ ২২ উইকেট শিকার করে ফ্রাঞ্চাইজি এ টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জয়ের পাশাপাশি বেস্ট বোলারের পুরস্কারও জিতেছেন চট্টগ্রামের তারকা পেসার কাটারমাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান।
রান সংগ্রহে সবার ওপরে চট্টগ্রামের ওপেনার লিটন কুমার দাস। জাতীয় দলের এই তারকা ওপেনার ১০ ম্যাচে তিন ফিফটির সাহায্যে ৩৯৩ রান সংগ্রহ করে বেস্ট ব্যাটসম্যানের পুরস্কার জিতেছেন।
স্পেশাল পারফরম্যান্সের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন রাজশাহীর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি টুর্নামেন্টের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম (৬৪ বলে) সেঞ্চুরি করে পুরস্কৃত হয়েছেন বরিশালের তরুণ ব্যাটসম্যান পারভেজ হোসেন ইমন।
৮ ম্যাচে ১৫ ও ১৩ উইকেট শিকার করে স্পেশাল পারফরম্যান্সের পুরস্কার জিতেছেন চট্টগ্রামের শরিফুল ইসলাম ও ঢাকার রবিউল ইসলাম।
তবে সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ আশরাফুল ভক্ত-সমর্থকদের প্রত্যাশানুযায়ী খেলতে পারেননি। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দীর্ঘ এক বছর পর বাইশ গজের লড়াইয়ে নেমে নিজের নামের মান রাখতে ব্যর্থ হন সাকিব। ৯ ম্যাচে তার সংগ্রহ ১১০ রান ও ৬ উইকেটের বিনিময়ে দিয়েছেন ২০৪ রান।
‘এ’ গ্রেড ক্যাটাগরির কোনো খেলোয়াড় না থাকলেও আশরাফুলকে দলে ভিড়িয়ে সমর্থন কুঁড়িয়েছিল মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। তবে তিনিও সমর্থকদের আশাহত করেছেন। ৫ ম্যাচে ৫৭ রান সংগ্রহ করেছেন এই সাবেক টাইগার অধিনায়ক।