সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে সব পক্ষেরই সচেতনতা দরকার : আলোচনা সভায় অভিমত ক্ষতিপূরণ দাবি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ ৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল ঢাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পল্লী বিদ্যুতের ৭ জন বরখাস্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের কর্মসূচি স্থগিত ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজে হামলা- ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত বরাদ্দের মধ্যেই দিবস পালন করতে হবে : জেলা প্রশাসক চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় আবদুল ওয়াহেদ নেতৃত্বাধীন প্যানেলের

রাঙামাটির পর্যটন শিল্পে ধস, প্রতিদিন কোটি টাকা লোকশান

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৩ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

 

সবুজ পাহাড়, ঝর্ণা ও লেকে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লিলা নিকেত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা। অনিন্দ্য সুন্দর  রাঙামাটির যে দিকে থাকায় শ্যামল পাহাড় আর কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ ফটিকজল যেন পর্যটকদের হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। বিশেষ করে বাঘাইছড়ির সাজেক ভ্যালিকে বলা হয় পর্যটক আকর্ষণের প্রাণকেন্দ্র। এখনে মেঘের সঙ্গে পাহাড়ের মিতালি দেখার জন্য সারা বছর পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।

হঠাৎ করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে তিন দফায় পাহাড়ি বাঙালি সঙ্গাতের কারণে ও রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের তরফ থেকে পর্যটক আগমনে নিরুৎসাহিত করায় রাঙ্গামাটি পর্যটক স্পট গুলো পর্যটক শূন্য হয়ে খাঁ খাঁ করছে। পাহাড়ের পর্যটন শিল্পে নেমে এসেছে ধস। ফলে পর্যটন স্পট গুলো প্রতিদিন কোটি টাকা লোকসান গুনছে। বন্ধের দিন ও যে কোনো উৎসবে বা ছুটির দিনে রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না। কটেজ ও হোটেলে স্থান না পেয়ে বাধ্য হয়ে অনেক পর্যটককে তাঁবু টাঙিয়ে রাত্রি যাপন করতেও দেখা যেত নিয়মিত।

পর্যটকদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে  রাঙামাটি ও সাজেকে অসংখ্য কটেজ-হোটেল-মোটেল গড়ে উঠেছে। গড়ে উঠেছে পর্যটকনির্ভর অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে তাঁত শিল্প। কোমর তাতেঁর তৈরী কাপড় শুধু দেশে নয় বিদেশেও এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষেরা জীবিকা নির্বাহ করে পর্যটকদের উপজীব্য করেই। শুধু কাপ্তাই লেকে বোটর্, ইঞ্জিন বোর্ট ,লঞ্চ নৌকা সাম্পান মিলে ৫হাজার লোক জীবীকা নির্বাহ করে থাকে। তারা এখন  সবাই অলস বসে দিন কাটাচ্ছেন।

সম্প্রতি সময়ে রাঙামাটির ও সাজেক ভ্যালির এসব কটেজ, হোটেল ও মোটেল ফাঁকা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতেও নেই কেনা কাটা। একটানা গত পক্ষকাল  ধরে কোনো পর্যটক নেই  সেখানে। যে কারণে রাঙামাটি ও সাজেক কটেজ এবং পরিবহন মালিকরা কোটি টাকা ব্যবসা করতে পারেননি। আয়বঞ্চিত হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এই সব সংস্থার লোকেরা বসে লোকসান গুনেছে কয়েক কোটি টাকা। সাজেক পর্যটনহীন থাকার কারণ, পার্বত্য অঞ্চলের অস্থিরতা। নিরাপত্তাহীনতা কারণে সাজেকে যাচ্ছেন না পর্যটক। সাজেক ভ্রমণে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য পর্যটকদের  নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ভোরে খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়ায় মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে মো. মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে ১৯ সেপ্টেম্বর জেলার দিঘীনালা উপজেলার লারমা স্কোয়ার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ওই ঘটনায় খাগড়াছড়িতে তিনজন নিহত হন।
এ ঘটনায় রেশ হিসেবে ২০ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ বাধে। এতে দোকানপাট ও সরকারি ভবন ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় এক যুবক নিহত হন। গত ০১ অক্টোবর খাগড়াছড়ির টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষককে পাহাড়ি ছাত্র-যুবরা পিটিয়ে মারলে সেখানে পাহাড়ি-বাঙালিদের সংঘর্ষ বাধে।

এসব সহিংসতার ঘটনায় গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে সাজেকে নতুন করে কোনো পর্যটক যেতে পারেনি। এর মধ্যে পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং জানমালের নিরাপত্তা দিতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দফায় একটানা নয় দিন সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে। পরে ৪ঠা অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্ট পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে।

সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতির  সাংগঠনিক সমপাদক জানান, গত ২০ তারিখ থেকে একটানা ১৫ দিন পর্যটকশূন্য সাজেক। এ মৌসুমে সহিংসতার ঘটনা না ঘটলে তারা  কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারতেন। পর্যটক আসতে না পারায় তাদের কয়েক কোটি টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

তারা রাঙামাটি, বান্দরবন ও খাগড়াছড়িসহ সাজেকের পর্যটন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান তিনি। রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ম্যানেজার অরোক বিকাশ চাকমা জানান তারা প্রতিদিন ৬৯/৭০ হাজার টাকা লোকসান দিচ্ছে। গত ১৫ দিন ধরে তাদের হোটেলে কোন বুকিং নেই বলে জানান। রাঙ্গামাটি  রাজবন বিহার , সুভলং ঝর্ণা , সাজেহ ও কাপ্তাই বাঁধ এলাকা দেখার মতো পর্যটন স্পট। এখন সেখানে সন্ধ্যা হলে শুধু ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক শুনা যাচ্ছে।

রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মঈন উদ্দিন সেলিম জানান, ভরা মৌসুমে  এই ঘটনায় তাদের ব্যবসায় ধস নেমেছে। পর্যটকের অভাবে সারা জেলায় পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকেরা হা-হাকর করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com