বিডি ঢাকা ডেস্ক
রাজশাহী জেলায় হিমাগার রয়েছে ৪৩টি। এতে সংরক্ষণ করা যায় প্রায় ৮৫ লাখ বস্তা আলু। প্রতি বস্তায় আলু থাকে ৬০ থেকে ৬৫ কেজি। এখনও অনেক হিমাগারে আলু মজুত করে রাখা হয়েছে।
এসব হিমাগারের মধ্যে রোব ও মঙ্গলবার রাজশাহীর পবা উপজেলার দুটি হিমাগার থেকে সব আলু বের করে ৩৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা এ আলু কিনেছেন। খোলাবাজারে এ আলু ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা। কিন্তু সেই আলু রাজশাহীর কাঁচাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে।
বুধবার রাজশাহীর সাহেববাজার কাঁচাবাজারে গিয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পুরনো আলু ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বলেন, সরকার পাইকারি বাজারে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও হিমাগার মালিক ও ব্যবসায়ীরা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে আলু মজুত রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। তারা বাজারে বেশি দামে আলু বিক্রি করছেন।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ী ও মধ্যস্বত্বভোগী একটি চক্র যোগসাজশে আলুর দাম বাড়িয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে। হিমাগারটি থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে রাজশাহী শহরের কাঁচাবাজারের ৩৯ টাকার আলু বিক্রি করা হচ্ছে ৭০ টাকায়।
গোলাম মোস্তফা মামুন জানান, রোব ও মঙ্গলবার দুটি হিমাগারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মোট দুই হাজার ৬০৬ বস্তা আলু বিক্রি করা হয়েছে। আলুর বাজারে কয়েক দফা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চলমান অস্থিরতা ঠেকাতে সম্প্রতি পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। মজুত করা আলু ৩০ নভেম্বরের পর হিমাগারে রাখা যাবে না- এমন আদেশও দিয়েছে সরকার। কিন্তু পবার কয়েকটি হিমাগার নির্ধারিত সময়ের পরও বিপুল পরিমাণ আলু মজুদ করে রেখেছিল।
জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান পবার নওহাটা পৌরসভা এলাকার আলাইবিদিরপুর এলাকার আমান কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালিয়ে প্রতিটি ৬০ কেজির ৩০৬ বস্তা আলু খোলা বাজারে ৩৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি দেন। এই টাকা আলুর মালিককে দেওয়া হয়।
এর একদিন পর মঙ্গলবার একই এলাকার রহমান ব্রাদার্স কোল্ড স্টোরেজ প্রাইভেট লিমিটেডে অভিযান চালান। সেখান থেকে দুই হাজার ৩০০ বস্তা আলু বের করে বিক্রি করা হয়েছে।
পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহরাব বলেন, মোট দুই হাজার ৬০৬ বস্তা আলু জব্দ করা হয়। খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা এসে আলু সরকারি দরে কিনে নিয়ে যায়। যাদের কাছে আলু বিক্রি করেছেন তাদের ফোন নম্বর রেখে দিয়েছেন। এই আলু ভোক্তাদের কাছে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করা হবে। তারা যেখানে আলু বিক্রি করবেন সেখানে তারা তদারকি করবেন। যদিও এ পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব না। তারপরেও তারা করবেন।
তিনি বলেন, এখনো রাজশাহীর অনেক হিমাগারে আলু মজুত আছে। পর্যায়ক্রমে সব হিমাগার পরিদর্শন করা হবে। আমাদের দায়িত্ব হিমাগারের মজুত খালি করে দেওয়া। এরই মধ্যে দুটি হিমাগার খালি করে ফেলা হয়েছে।