বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

রাজশাহী নগরে চুরি হচ্ছে সড়ক বিভাজকের লোহা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

রাজশাহী নগরে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সড়ক বিভাজক ও সড়কের পাশে লোহা দিয়ে মোড়ানো ফ্রেম থেকে হরদম রড চুরি হয়ে যাচ্ছে। এসব ফ্রেমের মাঝে বিভিন্ন ধরনের শোভাবর্ধনকারী গাছ লাগানো আছে।

নগরের মোহনপুর এলাকায় গত ১৫ দিনে লোহা চুরির সময় তিনটি দলকে আটক করেন এলাকাবাসী। তাদের হাতেনাতে ধরার পর মারধরও করা হয়েছে। তবে চুরি থামেনি। শুধু রাস্তার লোহা নয়, এই এলাকায় নির্মাণাধীন একটি পাবলিক টয়লেটের কয়েকটি লোহার গ্রিলও চুরি হয়ে গেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন।

নগরের চৌদ্দপায় বিহাস এলাকা থেকে আলিম মীম ভাটা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কের পুরোটার সড়ক বিভাজকে লোহার ফ্রেম দেওয়া আছে। এর মাঝখানে রোপণ করা হয়েছে শোভাবর্ধনকারী গাছপালা। সড়কটির বিহাস, মোহনপুর এলাকায় বিভাজকে ও দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার লোহার ফ্রেম রাতে চুরি হয়ে যাচ্ছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে চুরি, ছিনতাই বেড়ে গেছে। চোর, ছিনতাইকারীরা শেষ পর্যন্ত রাস্তার রড চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। একেক দিন একেক দল আসে চুরি করতে। শুধু তা–ই নয়, একটি টয়লেটের কয়েকটি লোহার কলাপসিবল গেটও চুরি করে নিয়ে গেছে তারা।

স্থানীয় লোকজন আরও বলেন, এই রাস্তায় রাতে যদি টহল দেওয়া যায়, তাহলে সরকারি সম্পদগুলো রক্ষা পেত। কিন্তু সরকারি দপ্তরগুলোর এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই। যারা চুরি করতে আসে, অধিকাংশই মাদকাসক্ত। কখন কার শরীরে আঘাত করে, সেই আতঙ্কও পেয়ে বসেছে এলাকাবাসীকে।

নগরের মোহনপুর এলাকার বাসিন্দা জাহিদুজ্জামান এই রকম চুরি তিনটি হতে দেখেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর ওই রাস্তার পাশে থাকা তাঁর দোকান থেকে চুরি হয়েছিল। এই কারণে রাতে তিনি দেরি করে বের হন। প্রায় ১৫ দিন আগে রাত দেড়টার দিকে বের হয়ে দেখেন ১৫ থেকে ১৬ বছরের দুজন লাথি মেরে লোহার ফ্রেম থেকে অ্যাঙ্গেল ভেঙে নিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে দুজনকে আটক করেন এলাকাবাসী। তাদের কাছ থেকে সেলাই রেঞ্চ ও হাতুড়ি পাওয়া যায়। তারা চারটি রড ভেঙেছিল। এলাকার কয়েকজন তাদের বেঁধে রাখেন। পরে মারধর করে ছেড়ে দেন।

সম্প্রতি ওই রাস্তায় গিয়ে দেখা গেছে, বিহাস এলাকায় রাস্তার মাঝখানে বিভাজকের লোহার ফ্রেমের বেশির ভাগ রডই চুরি হয়ে গেছে। এ ছাড়া রাস্তার দুই পাশে থাকা লোহার বেড়া থেকেও রড চুরি হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় লোহার রড বাঁকিয়ে রাখা হয়েছে।

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা হাফিজুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে আরও দুজনকে আটক করা হয়। তারা কেডস পরে লোহার ফ্রেমে লাথি মেরে রড ভাঙছিল। এই দুজন এসেছিল পাশের এলাকা বুধপাড়া থেকে। তাদের মারধর করেছিলেন স্থানীয় কয়েকজন। পরে কান ধরে ওঠবস করিয়ে তাদের ছাড়া হয়। তিনি বলেন, এভাবে তো চলতে পারে না। এই সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে সবার টাকা দিয়ে। এগুলো রোধ করা জরুরি। কিন্তু এলাকাবাসী কত রাত পাহারা দেবে? এ জন্য সিটি করপোরেশনকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

ওই এলাকার বাসিন্দা মো. জিন্নাহ বলেন, রাস্তার পাশে একটি পাবলিক টয়লেট করা হচ্ছিল। এর কয়েকটি প্রবেশমুখ আছে। সেখানে কয়েকটি লোহার কলাপসিবল গেট করা হয়েছিল। সেগুলোও চুরি করে নিয়ে গেছে। তাঁর পরামর্শ, এই রাস্তায় একজন নিরাপত্তা প্রহরী রাখতে হবে, যাঁর কাজ হবে মোটরসাইকেল বা গাড়ি দিয়ে রাতে চলাচল করা। কয়েক দিন এভাবে করতে পারলে চুরি হবে না।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ উল ইসলাম বলেন, চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে তাঁরাও উদ্বিগ্ন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আহমদ আল মঈন বলেন, চুরির একাধিক ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com