বিডি ঢাকা স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীতে সন্তানের হাতে পিতা হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। নিহত ব্যক্তি সাজ্জাদ আলী (৬৫)। সে নগরীর দামকুড়া থানার বিন্দারামপুর গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনায় মৃতের সন্তান মোঃ রাসেল আলী স্বপন (৩২)কে গ্রেফতার করেছে আরএমপি’র দামকুড়া থানা পুলিশ।
আজ ২০ জানুয়ারি ২০২২) দুপুর ১২ টায় আরএমপি সদরদপ্তর কনফারেন্স রুমে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) জনাব মোঃ মজিদ আলী বিপিএম মহোদয় এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারি ২০২২ রাত্রী পোনে ১০ টায় সাজ্জাদের বড় ভাই মোঃ সাজদার রহমান হাদী দামকুড়া থানায় অভিযোগ করেন যে, তার ভাই সাজ্জাদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে দামকুড়া থানায় একটি নিখোঁজ জিডি এন্ট্রি হয়।
জিডি এন্ট্রি পরবর্তীতে দামকুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ মাহবুবুর রহমানের নেতেৃত্বে এসআই মোঃ গোলাম মোস্তফা ও তার টিম নিখোঁজ সাজ্জাদের অবস্থান সনাক্তপূর্বক উদ্ধারে অভিযান শুরু করেন।
অভিযান পরিচালনাকালে দামকুড়া থানা পুলিশের ঐ টিম নিখোঁজ সাজ্জাদের বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে তার ছেলে রাসেলসহ আশপাশের স্থানীয় ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে নিখোঁজ সাজ্জাদের ছেলে রাসেল অসংলগ্ন ও এলোমেলো কথাবার্তা বলতে থাকে। তার এই সন্দেহজনক কথাবার্তার কারণে তাকে থানায় নিয়ে এসে তার পিতার নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন কৌশলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রাসেল জানায়, গত ১৯ জানুয়ারি ২০২২ রাত সাড়ে ১২ টায় (১৮ জানুয়ারি ২০২২ দিবাগত) টায় প্রথমে সে তার পিতা সাজ্জাদকে পলিথিন দ্বারা শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করে। তার পিতা ঘুম ভাঙ্গলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে আসামী খাটের নিচে থাকা কাঠের লাঠি দ্বারা তাকে আঘাত করে এবং ধারালো চাকু দ্বারা গলা কেটে হত্যা করে। পরবর্তীতে আসামী তার পিতার লাশ গুম করার জন্য ধারালো চাকু ও কাঠের লাঠিসহ লাশ নিজ বাড়ির দক্ষিণ পাশে টয়লেটের সেফটি ট্যাংকির ভিতরে রাখে।
পরবর্তীতে দামকুড়া থানা পুলিশ আসামী রাসেলকে সাথে নিয়ে আজ ২০ জানুয়ারি ২০২২ রাত সাড়ে ৩ টায় (১৯ তারিখ দিনগত রাত) অভিযান পরিচালনা করে আসামীর দেওয়া তথ্যমতে টয়লেটের সেফটি ট্যাংকির ভিতর হতে নিখোঁজ সাজ্জাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, মৃত সাজ্জাদের স্ত্রী মৃত্যুর ১ বছর পর দ্বিতীয় বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এতে তার ছেলে আসামী মোঃ রাসেল আপত্তি করে। মুলতঃ দ্বিতীয় বিয়ের কারণে জমিজমা ও অর্থসম্পদের অংশীদার বেড়ে যাওয়ার আশংকা থেকেই তার পিতার সাথে প্রায়শই দ্বন্দ্ব-ফ্যাসাদ লেগে থাকতো। অর্থ সম্পদ ও জমিজমা একভাবে ভোগদখলের উদ্দেশ্যে একপর্যায়ে রাসেল পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।