রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রচেষ্টায় হারিয়ে যাওয়া ৭ বছর বয়সী উম্মে হাবিবা ও ৩ বছর বয়সী আদিয়াকে ফিরে পেয়েছে তার মা। পিতৃহারা নিখোঁজ সন্তানদের ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা মা নাজনীন আক্তার। শিশু দুইটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর থানার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
গত ১৯ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ডিবি পুলিশের এসআই মো: আশরাফুল ইসলাম শিশু দুইটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের হাতে তুলে দেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো: আরেফিন জুয়েলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এসআই মো: আশরাফুল ইসলাম ও তার টিম গত ১৯ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগর এলাকায় অভিযান ডিউটি করছিল। এসময় তারা রাজপাড়া থানার ঝাউতলা মোড়ে দুইটি শিশুকে কান্নাকাটি করতে দেখে। এসআই আশরাফুল শিশু দুইটিকে কান্নাকাটির কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা কিছু বলতে পারে না। তখন ডিবি পুলিশের ঐ টিম তাদের ডিবি অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের সাথে বন্ধসুলভ আচরণ করে কান্নাকাটির কারণ জানতে চায়। তখন ৭ বছর বয়সী শিশু জানায়, তার নাম মোসা: উম্মে হাবিবা ও তার ছোট বোন মোসা: আদিয়া (৩)। তাদের বাবা মৃত হাবিবুর রহমান। তারা মায়ের সাথে ডাক্তার দেখানোর জন্য রাজশাহীতে এসেছিল।
এরপর ডিবি পুলিশের ঐ টিম শিশু দুইটির মায়ের সন্ধানের জন্য আরএমপি কন্ট্রোলকে অবহিত করেন। এছাড়াও ডিবি পুলিশ রাজশাহীর বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজারদের ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান এবং সিকিউরিটি গার্ডদের মাধ্যমে হ্যান্ডমাইকিং করেন। এর পাশাপাশি তারা শিশু দুইটির মাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে থাকেন। অবশেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টায় শিশু দুইটির মা নাজনীন আক্তারকে রাজশাহী এ্যাপোলো হাসপাতালের সামনে কান্নারত অবস্থায় খুঁজে পায়।
হারিয়ে যাওয়া শিশু দুইটির মা নাজনীন জানান, গত ১৯ আগস্ট ২০২২ বিকেলে তার দুই মেয়ে উম্মে হাবিবা ও আদিয়াকে সাথে নিয়ে তার মায়ের চিকিৎসার জন্য রাজশাহীর জেনারেল হাসপাতালে আসেন। সেখানে নাজনীনের পরিচিত মো: জহুরুল ইসলাম তার দুই মেয়েকে বাহিরে নিয়ে আইসক্রিম কিনে দিয়ে আবার হাসপাতলের ভিতরে রেখে যান। চিকিৎসা শেষে নাজনীন আক্তার শিশু দুইটিকে তার কাছে নিয়ে আসার জন্য জহুরুলকে ফোন দিলে সে জানায়, তাদের অনেক আগেই হাসপাতালে রেখে এসেছে। পরে তারা শিশু দুইটিকে খোঁজা-খুঁজি শুরু করেন।
রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে শিশু দুইটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পিতৃহারা শিশু দুইটিকে ফিরে পেয়ে মা নাজনীন আক্তার অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি-সহ তার নিকট আত্মীয়রা আরএমপি ডিবি পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।