বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
আজ ৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজন :জেলা পর্যায়ে উদ্বোধনী ও আইডিয়া শোকেসিং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ৮০ কি.মি. বেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রামেবি স্থাপনের জমির দখল বুঝে পেল কর্তৃপক্ষ নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতের লক্ষ্যে হোটেল ও রেস্তোরা পরিদর্শনে রাসিকের স্যানিটারী পরিদর্শকগণ মশা নিয়ন্ত্রণে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত গোদাগাড়ীতে হেরোইনসহ মাদক কারবারী আটক রাজশাহীতে নামিদামি ব্যান্ডের নামে নকল প্রসাধনীর কারবার, একজন গ্রেপ্তার চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের দোয়া ও ইফতার

কেন রোজা নষ্ট হয়?

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১
  • ৩১১ বার পঠিত

ফাতেমা আক্তার ময়না : আমরা জানি, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত একজন মুমিন-মুসলিমকে রোজা রাখতে হয়। এই রোজা অবস্থায় কিছু কাজ রয়েছে যা করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কিছু পানাহার করা। এই পানাহার করা মানে গলার মাধ্যমে পাকস্থলীতে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে এ কাজটি করলেই রোজা ভঙ্গ হবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করার সময় নাকে পানি দেয়ার বিষয়টি তথা নাকের গভীরে পানি দিয়ে পরিষ্কার (ইসতিনশাক) করার বিষয়টি, রোজা অবস্থায় নিষেধ করেছেন। তাই রোজা অবস্থায় নাকের মাধ্যমে পানি গলায় গেলে এবং তা গিলে ফেললে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।

তবে এ বিষয়ে হানাফী মাজহাবের আলিমদের মতানুসারে রোজা অবস্থায় হিজামা বা শিঙ্গা বা কাপিং পদ্ধতিতে অল্প পরিমাণে রক্ত বের করা মাকরুহ তানজিহি সহকারে বৈধ। এ ক্ষেত্রে বেশী পরিমাণে রক্ত বের হলে বা হিজামা গ্রহিতা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পরার আশঙ্কা থাকলে হিজামার মাধ্যমে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। রাসূল সা. এর পরবর্তী জীবনের আরেকটি হাদিসের মাধ্যমে বিষয়টিকে অল্প পরিমাণে রক্ত বের হওয়া ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পরার আশঙ্কা না থাকার শর্তে রোজা অবস্থায় হিজামার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

একইভাবে কোনো ব্যক্তিকে দেয়ার জন্য অথবা দান করার জন্য রোজা অবস্থায় রক্ত প্রদান করলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। তবে রোজা অবস্থায় স্যাম্পল হিসেবে পরীক্ষার জন্য রক্ত দিলে রোজা নষ্ট হবে না। ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে কেউ বমি করলে অথবা অল্প পরিমাণে বমি মুখে এনে তা গিলে ফেললে, তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। কোনো রোজাদার মহিলার রোজা অবস্থায় পিরিয়ডের রক্ত দেখা দিলে তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। এটা যদি সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ আগে পর্যন্তও দেখা যায়, তাহলেও তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।

রোজা অবস্থায় ধূমপান করলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। তেমনি ইচ্ছাকৃতভাবে আগর বাতি, লোবান ইত্যাদির ধোঁয়া নাকে-মুখে গভীরভাবে গ্রহণ করলেও রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। কেউ রোজা অবস্থায় ভুল করে কোনো কিছু পান করল, অথবা কোনো কিছু আহার করল, এরপর সে মনে করল যে তার তো রোজা নষ্ট হয়ে গেছে, এ অবস্থায় সে আবার নিজের ইচ্ছায় পানি বা খাবার গ্রহণ করল, তাহলে তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।

একইভাবে রোজা অবস্থায় কোনো হালাল বা বৈধ কাজ করলো, যেমন যৌন উত্তেজনা ছাড়া স্ত্রীকে চুম্বন করল বা মাথায় তেল দিলো, এরপর তার ধারণা হলো যে তার রোজা নষ্ট হয়ে গেছে, এরপর সে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার ইত্যাদি করল, তাহলে তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।

কোনো একজন ব্যক্তি ধারণা করল যে, এখনো সুবহে সাদিক হয়নি, অথচ সুবহে সাদিক অনেক আগেই হয়ে গেছে, এ অবস্থায় রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সেহরি বা কোনো কিছু পানাহার করলো, তবে তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। একইভাবে সূর্যাস্ত হয়নি, এখনো অনেক দেরি আছে, এমতাবস্থায় রোজাদার মনে করল যে সূর্যাস্ত হয়ে গেছে, সে রোজা ভঙ্গের যে কোনো একটি আচরণ করলো, যেমন ইফতার করে ফেলল বা পানাহার করল, এরপর সে নিশ্চিত হলো যে সূর্য অস্ত যায়নি। এমতাবস্থায় তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।

এমন কোনো বস্তু যা সাধারণত খাওয়া হয় না, যেমন: কাঠের টুকরা, কাগজ, পাথর, মাটি, কয়লা ইত্যাদি, এসব রোজা অবস্থায় খেলেও রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। দাঁতে কোনো খাবারের টুকরো আটকে ছিল, সুবহে সাদিকের পর সে টুকরাটি বের করে, ইচ্ছা করে গিলে ফেলল, তাহলেও তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। কোনো রোজাদার যে কোনো কারণেই হোক রোজার নিয়ত করল না। সচরাচর অন্যান্য খাবারের মতো খাবার খেলো, পানাহারের মতো পানাহার করল, তাহলে তার এ রোজাটিও নষ্ট হয়ে যাবে।

কোনো ঈমানদার ব্যক্তি মুরতাদ অথবা ধর্মচ্যুতির মাধ্যমে বেঈমান হয়ে গেল, আবার রোজা অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা বা কিছু সময় পর তওবা করে ইসলামে ফিরে এলো, তাহলেও তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। কোনো রোজাদারের রোজা অবস্থায় মিথ্যা কথা বলা, অশ্লীল কাজ করা, ঝগড়া-বিবাদ করা, কিংবা পানাহার ছাড়াও অন্যান্য অপরাধমূলক কাজ, অথবা ইসলামী শরীয়তের নিষিদ্ধ কাজগুলো করার মাধ্যমে তার রোজার ফজিলত বা মর্যাদা নষ্ট হবে, তবে রোজা ভাঙ্গবে না, রোজা নষ্ট হবে না।

রোজা নষ্ট হওয়ার মাসআলাগুলো অনেক দীর্ঘ। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মাসাআলা রয়েছে। কিছু কিছু কারণে রোজা নষ্ট হলে শুধু কাযা করতে হয়, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাযা এবং কাফফারা দুটোই আদায় করতে হয়। লেখার পরিধি বৃদ্ধি পাবে বলে এখানে বিষয়গুলো আলোচনা করা সম্ভব হলো না। আল্লাহ আমাদেরকে জেনে বুঝে, রোজার মাসআলা শিখে, রোজা পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন!

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com