বিডি ঢাকা ডেস্ক
আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার (লিগ্যাল এইড) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে জেলা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান জেলা ও দায়রা জজ মো. মিজানুর রহমান।
এই সময় তিনি প্যানেল আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন- লিগ্যাল এইড কমিটির মাধ্যমে যারা বিচারপ্রার্থী হবেন, তারা যেন মামলার দীর্ঘসূত্রতার শিকার না হন। তারা যেন সঠিক সময়ে বিচারটা পান, সে জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি বলেন- জেলখানা কোনো সুখের জায়গা নয়। সেখানে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন থাকে না। জেলখানা কষ্টের জায়গা। কাজেই জেলখানা থেকে মামলা পরিচালনার জন্য কেউ লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করলে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।
লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের উদ্দেশ্যে মিজানুর রহমান বলেন- আপনারা আপোস-মীমাংসাযোগ্য অনেক মামলা পরিচালনা করেন, যেসব মামলা আপোস-মীমাংসা করতে ব্যর্থ হবেন, সেগুলোকে লিগ্যাল এইড কমিটিতে পাঠাবেন। কেননা লিগ্যাল এইড উভয়ের জন্যই সমান গুরুত্ব দেবে। সরকারের আইনগত সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জকে আমরা একটি মডেল জেলা হিসেবে দেখতে পাবো বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় আলোচনা করেন- ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু তালেব। সভা পরিচালনা করেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার এবং সিনিয়র সহকারী জজ বেগম রুখশানা খানম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম, জেল সুপার শরিফুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সোলায়মান বিশু ও সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক পিন্টু, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল ওদুদ, সরকারি কৌঁসুলি মোসাদ্দেক হোসেন কাজল, জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট আফসার আলী, অ্যাডভোকেট লাইলা চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদসহ অন্যরা।
এসময় লাইট হাউসের আইন সহায়তা অ্যাক্টিভিটি প্রকল্পের কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন, প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির সহকারী ব্যবস্থাপক পঙ্কজ কুমার পাল এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ কমিটির অন্য সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার এবং সিনিয়র সহকারী জজ বেগম রুখশানা খানম সভায় জানান, গত ৩০ অক্টোবর থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত মামলার জন্য ১৪টি আবেদন পাওয়া যায়। তার মধ্যে ২টি দেওয়ানি, ৭টি ফৌজদারি, ৫টি পারিবারিক আবেদন। এছাড়া একই সময়ের মধ্যে আপোস-মীমাংসার জন্য ২০টি আবেদন পাওয়া যায়। তার মধ্যে ৪টি দেওয়ানি, ১টি ফৌজদারি ও ১৫টি পারিবারিক বিষয় রয়েছে। একই সময়ে ১৯টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আর সফলভাবে ১১টি আবেদন মীমাংসা করা হয়েছে এবং বিফল হয়েছে ৮টি আবেদন। ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
এছাড়া গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত আপোস-মীমাংসার জন্য মোট ২৫টি আবেদন পাওয়া যায়। তার মধ্যে ৮টি ফৌজদারি, ৩টি দেওয়ানি ও ১৪টি পারিবারিক আবেদন। এসব আবেদনের মধ্যে আপোস-মীমাংসার মাধ্যমে ১০টি আবেদন সফলভাবে নিষ্পত্তি করা হয় এবং ১২টি আবেদন বিফল/নথিজাত করা হয়।