নিজস্ব সংবাদদাতা : সপ্তাহের ব্যবধানে আরেক দফা বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। পাশাপাশি চিনি, আদা, রসুন ও হলুদের দামও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা ও মাঝারি আকারের চালের দাম কমলেও সেসব চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
ফলে এসব পণ্য কিনতে ভোক্তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াবাজার, কাওরান বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এসব পণ্যের দাম বাড়ার চিত্র সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজারমূল্য তালিকায় লক্ষ করা গেছে। টিসিবি বলছে, সাতদিনের ব্যবধানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
পাশাপাশি পাম অয়েল প্রতি লিটারে দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ২১ শতাংশ। এছাড়া প্রতি কেজি দেশি আদার দাম ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। আমদানি করা আদা সাতদিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। প্রতি কেজি দেশি রসুন ৫ দশমিক ৫৬ এবং আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।
সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি হলুদের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর সাতদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকা। খোলা পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১০৫ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা।
নয়াবাজারের মুদি বিক্রেতা মো. তুহিন বলেন, চার মাস ধরে অস্থির ভোজ্যতেলের বাজার। পাইকারি থেকে শুরু করে মিলপর্যায়ে ধাপে ধাপে দাম বাড়ানো হয়েছে। কারণ বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তি। তবে এখন যে তেল বিক্রি হচ্ছে তা আগের কেনা। তারপরও মিলপর্যায়ে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। অন্যদিকে চালের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তবে এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব চাল। খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি বিআর-২৮ ও পাইজাম চাল বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা। মোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি স্বর্ণাজাতের চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা।
রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা দিদার হোসেন বলেন, সরবরাহ বাড়ায় চালের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কিন্তু এখনো মিলপর্যায়ে বাড়তি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দর বাড়তি।
প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হয়েছে ১১০-১১৫ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা।
প্রতি কেজি দেশি হলুদ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা। প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা। রাজধানীর কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা নুরুল আমিন বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বাড়তি।
চালের দাম যেন কমছেই না। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ভোজ্যতেল। এসব পণ্য কিনতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।