অনলাইন নিউজ : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলসহ ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তবে অর্ধেক নয়, সব আসনে যাত্রী নিয়ে বাস চালানো হবে। বাসে দাঁড়ানো যাত্রী নেওয়া যাবে না, মানতে হবে সব স্বাস্থ্যবিধি। এসব নিয়ম না মানলে শ্রমিকদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি এসব তথ্য জানান। কিন্তু বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে বৈঠকে বসে পরিবহন মালিকরা প্রধানমন্ত্রীকে এ শর্ত শিথিল করার অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তারা সাংবাদিকদের জানান, ভাড়া বেশি নেওয়া হবে না; কিন্তু সব আসনে তারা যাত্রী নিতে চান।
এ বিষয়ে এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘সারা দেশের সব বাস, যত আসন তত যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে। বিআরটিএর চেয়ারম্যানের কাছ থেকে আমরা মৌখিক সম্মতি পেয়েছি। এখনও চিঠি পাইনি আমরা। আজ তো সময় নেই, কাল ছুটির দিন তাই চিঠি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা যে সম্মতি পেয়েছি সেভাবেই আগামী শনিবার থেকে গাড়ি চালাব।’
এ বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারকে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তিনি বুধবার মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাস ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালাতে হবে। মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনা রয়েছে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে বাস চালাতে হবে। এখন পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তই রয়েছে। তবে মালিকরা দাবি জানিয়েছেন, ভাড়া না বাড়িয়ে সব আসনে যাত্রী নেবেন। এটা আমরা সরকারকে জানাব। তবে তার কথায় ইঙ্গিত ছিল যে, সরকার বা মন্ত্রিপরিষদ থেকে শ্রমিক-মালিকদের দাবি মেনে নেওয়া হবে।
২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েকবার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলেছে বাস। তবে তখন ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ বাস মালিক উদাসীন ছিলেন। বাসে নেওয়া হতো বেশি যাত্রী; কিন্তু ভাড়া কম নেওয়া হয়নি।
স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। আমাদের পক্ষ থেকে মনিটরিং থাকবে।’ এর পরও যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলেও তিনি জানান।
অন্যদিকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা ও নগর বাস টার্মিনাল মালিক সমিতি, ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনাল মালিক সমিতি এবং বৃহত্তর মিরপুর ও মোহাম্মদপুর বাস মালিক সমিতিকে বলা হয়েছে, বাসে যত সিট তত যাত্রী নিয়ে চলাচল করার জন্য।
আরও বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকালে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে গাড়িতে যত সিট তত যাত্রী নিয়ে চলাচলের সিদ্ধান্ত আমাদের মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। গাড়িতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখাসহ স্টাফ ও যাত্রীদের মাস্ক বাধ্যতামূলক থাকতে হবে। শ্রমিকদের করোনা টিকা নেওয়ার সনদপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। কোনোভাবেই গাড়িতে দাঁড়ানো যাত্রী বহন করা যাবে না। সব কিছু খোলা রেখে শুধু বাসে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন যৌক্তিক নয় বলেও মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের পরিচালক ডা. লেলিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় মানুষ কীভাবে কম নামবে সে ব্যবস্থা করতে হবে। সংক্রমণ না কমলে ধাপে ধাপে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ জাতীয় আরো খবর..