রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে সব পক্ষেরই সচেতনতা দরকার : আলোচনা সভায় অভিমত ক্ষতিপূরণ দাবি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ ৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল ঢাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পল্লী বিদ্যুতের ৭ জন বরখাস্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের কর্মসূচি স্থগিত ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজে হামলা- ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত বরাদ্দের মধ্যেই দিবস পালন করতে হবে : জেলা প্রশাসক চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় আবদুল ওয়াহেদ নেতৃত্বাধীন প্যানেলের

সরকারি কাজে অনিয়মে স্বপ্রণোদিতভাবে আদালতের মামলা!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৭১ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার সরকারের প্রচেষ্টার প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার পিএমখালী নুর মোহাম্মদ চৌধুরী বাজার থেকে মুহসিনিয়াপাড়ার সাইক্লোন সেন্টার পর্যন্ত দুই কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৩শ মিটার সড়কটি বাস্তবায়নের কাজে ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিতর্কিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান “আসাদ এন্টার প্রাইজ এর বিরুদদ্ধে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালত এর বিচারক আখতার জাবেদ। (যার মিচ মামলা নাং ০১/২৪ সদর)।
এছাড়া স্থানীয় প্রত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা করে ঠিকাদার “আসাদ এন্টার প্রাইজ” ও এলজিইডি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজসে আর্থিক অনিয়ম আছে কি না, বালির পরিবর্তে মাঠির ব্যবহার ও নিম্ন মানের খোয়া ব্যবহার করে সরকার ও জনগনের কি পরিমাণ ক্ষতি  করেছে তা জানতে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারীর মধ্যেই প্রতিবেদন দিতে পিবিআই’র বিশেষ পুলিশ সুপারকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে খোঁজ নিয়ে যানা যায়, মামলা হওয়ার পর আরও অজ্ঞাত শক্তির জোরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মো: অসাদুল ইসলাম। বৃস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে সাংবাদিকরা কাজের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ’র সামনেই তেড়ে এসে সন্ত্রাসী কায়দায় মারমুখী আচারণ করেন “আসাদ এন্টারপ্রাইজ”এর স্বত্ত্বাধিকারী মো: আসাদুল ইসলা। এসময় এলজিইডির সদর উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী মো: হেলাল উদ্দিনও দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারের পক্ষে অবস্থান নেন বলে জানান, সাংবাদিক শফিকসহ অন্যান্যরা। তিনি আরও জানান, বিতর্কিত ঠিকাদার আসাদকে সরকারি গাড়িতে বহন করে নিয়ে আসেন সহকারি প্রকৌশলী মো: হেলাল উদ্দিন। এসয় আসাদুল ইসলাম সাংবাদিকদেরকে বিষাদাগার সমালোচনাসহ নানান কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এছাড়া যারা রিপোর্ট করছেন ওই সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকি ও মিডিয়া মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকার ছড়াই তিনি।
এ বিষয়ে কক্সবাজার এলজিইডি’র নির্বাহি প্রকৌশলী মো: মামুন খান কে অবগত করলে “বিষয়টি খুবই দুঃখজনক” ওই ঠিকাদার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বলে আস্বস্ত করেন। এছাড়া কাজে কি কারচুপি ও অনিয়ম হয়েছে তা মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে নিধার্ারীত সময়ে আদালতে প্রতিবেদন প্রদান করা হবে”।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী মো: আলি আখতার হোসেনকে বিষয়টি অবগত করলে তিনিও দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বলে জানান।
স্থানীয় চৌধুরীপাড়ার জিসানসহ আরও অনেকেই জানান, “শুরু থেকে এই ঠিকাদার কাজে চরম অনিয়ম করলেও তা বাঁধা দিয়ে আসছে স্থানীয়রা।  কিন্তু উল্টো বেপরোয়া আচারআচারণ করেন এবং যুবলীগ এর হেডাম দেখায় তিনি। এভাবেই বালির বদল নিম্নমানের মাটি ও খোয়া দিয়ে কাজ  চলতে থাকলে সরকারের অর্থের পাশাপাশি জনসাধারণের চরম ক্ষতি হবে। তাই কাজের অনিয়ম বন্ধে এলাকায় যুব সংঘঠন এর ব্যানারে তাঁরা মানববন্ধন করবে”।
মুহসিনিয়াপাড়ার ওসমান সরওয়ার জানান, ”ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে পুরো সড়কে বালির পরিবর্তে মাটিযুক্ত বালি নিম্নমানের খোয়া দেওয়া হচ্ছে। যার কারণে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্খা যেমন রয়েছে তেমনি, সরকার ও জনসাধারণের কোটি টকার ক্ষতি হচ্ছে। আশা করি এই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থাপূর্বক সঠিক কাজটি বাস্তবায়ন হবে”।
স্থানীয় সুত্রে আরাও জানাযায়, এই বির্তকিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এর স্বত্বাধিকারী মো: আসাদ এর আগেও পিএমখালী ছনখোলা থেকে ঘাটকুলিয়া পাড়া সড়কের কাজ ২ বছর আগে শুরু করলেও অদ্যাবধি শেষ না করায় সরকারের প্রায় ২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যন ও জনসাধারণ বার বার সড়কের কাজ শেষ করার তাগিদ দিলেও অজ্ঞাত শক্তির জোরে কাউকে পাত্তাই দিচ্ছে না তিনি।
“কি করব বলেন। ঠিকাদারকে বারবার অনিয়মের বিষয়টি বলার পরও কর্নপাত করছেনা। কাজ করে যাচ্ছে নানা অনিয়মে। ফসলি জমির মাটির সাথে হালকা বালি মিশিয়ে ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করলে কেমন কাজ হবে আপনি অনুমান করেন”। কথাগুলো অনেকটা ক্ষোভের স্বরে বলছিলেন পিএমখালীর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, মাছুয়াখালী ও মুহসিনিয়াপাড়া থেকে দৈনিক ২০/২৫ টি কল আসে সড়ক নির্মানকাজের অনিয়ম নিয়ে।
একই ক্ষোভ ঝরে পড়ে কাজ চলমান ওয়ার্ড মুহসিনিয়া পাড়ার ইউপি সদস্য নুরুল আবছারের কথায়। তিনি বলেন— “প্রথম দিকে বালির পরিবর্তে মাটি দিয়ে নিচের অংশে কাজ করেছে এখন মাটি মিশ্রিত বালির সাথে সামান্য পরিমান ইটের খোয়া নিয়ে খুব বাজেভাবে কাজ চালাচ্ছে। এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছে। সড়কের নির্মান কাজের এমন অনিয়ম আগে হয়েছে কিনা জানিনা। এটাতো মূলত সরকারের বদনাম করার জন্য ঠিকাদার ইচ্ছাকৃত ভাবে করছে বলে মনে হয়”।
সড়ক নির্মানের অনিয়মের অভিযোগ স্বীকার করে এলজিইডির সদর উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী মো: হেলাল উদ্দীন জানিয়ে ছিলেন, “সড়কের কাজের শুরুতে অনিয়মের বিষয়টি জানি। কিন্তু এটি বিশ্বব্যাংকের সহায়তা প্রকল্প। অনিয়মগুলো প্রকাশিত হলে তারা মাইন্ড করবে।এমনকি প্রজেক্ট বাতিলও হতে পারে। আর সাংবাদিকদের সমন্বয় করবে তা দূরের কথা, সেখানেই আসাদ মারতে গেছে এটা খুবই দুঃখজনক। এটা স্যারকে আমরা জানায়ছি”।
এদিকে সরকারের মহৎ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে।স্বাধীনতার পর থেকে মাছুয়াখালী, ধাউন খালি, মুহসিনিয়াপাড়া, উত্তর পাতলির প্রায় লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ উক্ত সড়কটি কার্পেটিং করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছেন স্থানীয় লোকজন। দেশের আনাচে—কানাচে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল উক্ত এলাকার সড়কটি। স্থানীয় জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সরকার তা কার্পেটিং এর মাধ্যমে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। ফলে এলাকাবাসীর মুখে হাসি ফোটে। দেরিতে হলেও একটি কার্পেটিং সড়ক পাবে সে আশায়। কিন্তু ঠিকাদারের নানা ও অনিয়ম এবং গাফেলতির কারণে সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com