বিডি ঢাকা ডেস্ক
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিলে ভোক্তারা আশায় বুক বেঁধেছিল, এবার দুর্নীতি কমবে, টাকা পাচার বন্ধ হবে, পণ্যমূল্য কমবে। কমে আসবে মূল্যস্ফীতির বেপরোয়া চোখ রাঙানি। নতুন সরকারের তিন মাস পূর্ণ হলো আজ। এর মধ্যে পণ্যমূল্য কমেনি। উলটো আরও বেড়েছে। ব্যবস্থাগত কারণে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখনো ডাবল ডিজিটের খুব কাছাকাছি রয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার কমাতে মুদ্রানীতি সংকোচনমুখী করা ছাড়া অন্য কোনো শক্তিশালী পদক্ষেপ দৃশ্যমান হচ্ছে না। এতে ভোক্তার প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যকার বিস্তর ফারাক দেখা যাচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে শিগগিরই সহসা কমে আসবে পণ্যমূল্য। একই সঙ্গে কমবে মূল্যস্ফীতির হারও।আওয়ামী লীগ সরকারের আলমে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে-পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাড়িয়ে বেপরোয়া ঋণ গ্রহণ, টাকা পাচারের ঘটনাকে। নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপানো একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে। নতুন করে টাকা না ছাড়িয়ে আগের নেওয়া ছাপানো টাকার ঋণ পরিশোধ করে বাজারে ছাপানো টাকার প্রভাব কমতে শুরু করেছে। দেশ থেকে টাকা পাচার বহুলাংশে রোধ হয়েছে। ডলারের দামের ঊর্ধ্বগতিতে লাগাম পড়ে বেশ কিছুটা কমে এখন স্থিতিশীল হয়েছে। এসব ব্যবস্থাপনাগত কারণে মূল্যস্ফীতিতে চাপ কিছুটা কমেছে। যে কারণে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে এ হার কিছুটা কমেছে। আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। ওই সময়ে মূল্যস্ফীতি কমার পাশাপাশি মজুরি কিছুটা বেড়েছে। এতে ভোক্তার আয় ও ব্যয়ের মধ্যকার ঘাটতি কিছুটা কমেছে। কিন্তু পণ্যমূল্য কমছে না। উলটো কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। গত সরকারের একাধিক মন্ত্রী সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ছিল। যে কারণে তারা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এ সরকারের কেউ সিন্ডিকেটের সঙ্গে নেই। তারপরও পণ্যমূল কমছে না। তবে চাঁদাবাজি কমেনি। বরং বেড়েছে। সরকার বদলের পর চাঁদাবাজিও হাতবদল হয়েছে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সরকার এখনো কোনো শক্ত ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এছাড়া পণ্যের সরবরাহও স্বাভাবিক হয়নি। যে কারণে পণ্যের দাম কমছে না। পণ্যের দাম না কমার কারণে মূল্যস্ফীতির হারও বেশি হ্রাস পাচ্ছে না। ফলে ভোক্তার ভোগান্তি আগের মতোই রয়ে গেছে।