দুঃসময়ের বলয়ে ছিল দেশের ক্রিকেট। সেই আঁধার ফুঁড়ে উঁকি দিল অনন্য এক সাফল্যের সূর্যমুখ। টানা ১০ ম্যাচে জয়বিহীন থেকে সিরিজ শুরু করা দল দুই ম্যাচেই সিরিজে হারিয়ে দিল শ্রীলঙ্কাকে। ধরা দিল লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ। মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে গড়ে ওঠা এই জয়ের সৌধ বাংলাদেশকে পৌঁছে দিল আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকার চূড়ায়ও।
প্রথম ওয়ানডেতে তবু লড়াই জমেছিল বেশ। সেই ম্যাচের চেয়ে কম পুঁজি নিয়েও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতল অনেক বড় ব্যবধানে। ১০৩ রানের এই জয়ে নিশ্চিত হলো সিরিজ জয়।
ম্যাচের শুরুতেই তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানকে হারানো দলকে অসাধারণ এক ইনিংস খেলে উদ্ধার করেন মুশফিক। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ বোলিংয়ে দাঁড়াতেই পারেনি লঙ্কান ব্যাটিং।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ অলআউট হয় ২৪৬ রানে। শ্রীলঙ্কা ৩৮ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৬ রান তোলার পর বৃষ্টিতে বন্ধ হয় ম্যাচ। পরে তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪০ ওভারে ২৪৫। বাকি দুই ওভারে তারা যোগ করতে পারে ১৫ রান।
মুশফিক আগের ম্যাচেও ছিলেন দলের ত্রাতা। সেদিন আউট হয়ে যান ৮৪ রানে। এই ম্যাচে চ্যালেঞ্জ ছিল আরও কঠিন। তাকে উইকেটে যেতে হয় দ্বিতীয় ওভারেই। সেখান থেকে দলকে টেনে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হন, তার নামের পাশে তখন ১২৭ বলে ১২৫ রান।
ম্যাচের শুরুর চিত্রে যেমন মিল প্রথম ম্যাচের সঙ্গে, তেমনি মিল আছে মুশফিকের ইনিংস গড়ার ধরনেও। বাউন্ডারির দিকে না ঝুঁকে সিঙ্গেলস-ডাবলসে রান বাড়ানোর মাস্টারক্লাস মেলে ধরেন তিনি আরেকবার। প্রথম বাউন্ডারি মারেন ৪০ বল খেলার পর। ৭০ রান পর্যন্ত বাউন্ডারি ছিল ওই একটিই! শেষ দিকে আবার পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে দ্রুত কিছু বাউন্ডারিও আদায় করেন।
মুশফিকের ইনিংসটিই শেষ পর্যন্ত হয়ে থাকে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক।
ম্যাচের শুরুটা ছিল ঘটনার ঘনঘটায়। ইসুরু উদানাকে টানা তিনটি বাউন্ডারিতে শুরু করেন তামিম। এর মধ্যে একটি করে নো ও ওয়াইডও করেন উদানা। এই ওভারেই চতুর্থ বলে তামিম বেঁচে যান পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে।
১৫ রানের প্রথম ওভারের পরই বাংলাদেশের উল্টোযাত্রা। দ্বিতীয় ওভারে দুশমন্থ চামিরার দুর্দান্ত গতি ও সুইংয়ের জবাব পাননি তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। ভেতরে ঢোকা দুর্দান্ত দুটি ডেলিভারিতে চার বলের মধ্যে এলবিডব্লিউ দুজনই।