বিডি ঢাকা ডেস্ক
কুমিল্লার আদর্শ সদর দক্ষিণ উপজেলার জাঙ্গালিয়া উচ্চবিদ্যালয়-এর শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ, বিদ্যালয়ের মাঠের একটি বড় অংশ দখল করে রেখেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। মাঠের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, ট্রান্সফরমারসহ বিভিন্ন মালামাল, যা শিক্ষার্থীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু দখল সরানোর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, “শুধু আশ্বাস দিলেই তো হবে না। ছাত্রছাত্রীদের স্বাভাবিক পড়াশোনা ও খেলাধুলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। কিন্তু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে মাঠের এই দুরবস্থা দিন দিন আরও প্রকট হচ্ছে।”
সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ
স্থানীয়দের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব গুদাম থাকার পরও কেন বিদ্যালয়ের মাঠে তাদের মালামাল ফেলে রাখা হয়েছে? এতে সরকারের খরচ যেমন বাড়ছে, তেমনি এতে আর্থিক অনিয়ম ও লোপাটের অভিযোগও উঠেছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দার ভাষ্যমতে, “বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গুদাম রয়েছে, অথচ তারা স্কুলের মাঠ দখল করে রেখেছে। সরকার গুদামের জন্য খরচ করলেও তারা তা যথাযথভাবে ব্যবহার করছে না। এতে বোঝা যায়, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারি অর্থের অপচয় করছে।”
স্কুল কমিটি নীরব কেন?
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয় মাঠের এমন অবস্থা সৃষ্টির জন্য বিদ্যালয় কমিটিও দায়ী। কারণ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাই স্কুল কমিটির মূল দায়িত্বশীল ব্যক্তি। ফলে তারা নিজেরাই দোষী বলে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
ময়লার ভাগাড়ে পরিণত বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক
শুধু মাঠ দখলই নয়, বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনেও ময়লার স্তূপ জমে আছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এমন দায়িত্বহীন আচরণের কারণে একদিকে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। তাই সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ দখলমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেবে? নাকি আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এখন সেটিই দেখার বিষয়।