বিডি ঢাকা ডেস্ক
দক্ষিণ এশিয়ার সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা একটি দেশ বাংলাদেশ, আমাদের মাতৃভ‚মি। হাজার স্বপ্নের বীজ রোপণ করার উর্বর ভ‚মি বাংলাদেশ। সৎ ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক হওয়ার পাশাপাশি, কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের স্বপ্ন পূরণের কাক্সিক্ষত পথে পৌঁছাতে পারি বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করি।
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর তথ্য মতে, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। বাংলাদেশ বর্তমানে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হওয়ার পথে হাঁটছে। তবে এ যাত্রার শেষ কোথায়? তা নিয়ে হতাশা কাজ করছে বহু নাগরিকের মনেই। শুধু চিন্তা করলেই কি হবে? এ যাত্রার পথকে সংক্ষিপ্ত করতে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ধরন মিশ্র। এ মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সম্পদের রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিমালিকানা উদ্যোগ পাশাপাশি বিরাজ করে। ২৪ নভেম্বর, ২০২১ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়। সেখানে অর্থনীতির ৩টি যোগ্যতা নির্ধারণী সূচক রাখা হয় যার মধ্যে ১টি ছিল যে, মাথাপিছু আয় সূচকে ১২০৩ মার্কিন ডলার থাকতে হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশে এসব শর্ত পূরণ করার জন্য প্রয়োজন ব্যাপক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি।
আমরা জানি এ দেশের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর। তাই কৃষি খাতে ব্যাপক বরাদ্দ রাখতে হবে। আধুনিক চাষাবাদ, কলাকৌশল, উন্নত বীজ, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও কৃষকদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করলে কৃষকরা আগ্রহ ও উদ্দীপনা নিয়ে চাষাবাদ করতে পারবে যা প্রচুর ফলনে সাহায্য করবে। কৃষকের মুখে হাসি ফুটলে অর্থনীতির চাকা চলবে জোর গতিতে। পাশাপাশি রপ্তানি পণ্যগুলোর উৎপাদন বাড়াতে হবে যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের জনগণের সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ তে স্বাস্থ্যসেবার তথ্য অনুসারে রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার প্রতি জনসংখ্যা (২০১৮) ১৭২৪ জন। বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ৪০টি। তাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে আরও বেশি উন্নয়ন আনতে হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতেও শহুরে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প ব্যয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।আরও যে খাতটিতে গুরুত্ব দিতে হবে তা হচ্ছে শিক্ষা খাত। আশার কথা এই যে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বাজেট ধার্য করা হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ এর তথ্যমতে, উন্নয়ন বাজেটে এটাই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। এ বাজেটÑ এর সর্বোচ্চ সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে শহর থেকে গ্রামে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেন সকলে সমান সুযোগ এবং সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে আধুনিক ও কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে শিক্ষিত হয়ে সকলেই সঙ্গে সঙ্গে চাকরি পায় এমনটা হয় না। এক্ষেত্রে অনেকেই হতাশ হয়ে যায়। কিন্তু হতাশাগ্রস্ত না হয়ে বেকারত্ব দূরীকরণে তরুণদের নিজস্ব প্রতিভা, দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে তৈরি হতে হবে। সরকার কর্তৃক তাদের জন্য কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এসব প্রশিক্ষণ ও তরুণদের সুপ্ত প্রতিভার সন্নিবেশের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হওয়া সম্ভব।