সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
স্থগিত হওয়া ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষা যথাক্রমে ১৭ ও ১৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আহত-নিহতদের তালিকা তৈরিতে কমিটি গঠন মাইলস্টোন কলেজের নিহতদের স্মরণে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পলিটেকনিকে দোয়া মাহফিল সুনামগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ঘে নিহত ১ নাটোরে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের সাত সদস্যসহ ৮জন নিহত নাচোলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গর্ভবতী নারীর মৃত্যু তানোরে লটারীর মাধ্যমে ২টি পৌরসভায় ওএমএস ডিলার নিয়োগ গোদাগাড়ীতে স্যান্ডেলের ভেতর ৩০ লাখ টাকার হেরোইন! মাদক কারবারী মাহবুব গ্রেফতার তানোরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে লাঙল-জোয়াল রাজশাহী নগরীতে পাইলট তৌকিরের দাফন সম্পন্ন ; জানাযায় হাজারও মানুষের ঢল

স্মৃতিতে ‘মুড়ির টিন’

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৫৬ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

মুড়ির টিন- হঠাৎ মনে হবে মুড়ি রাখার পাত্র। স্বাভাবিকভাবে এমনটাই মনে হওয়ার কথা। কিন্তু এই মুড়ির টিন নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটের প্রথম গণপরিবহন ছিল নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে গুলিস্তান অথবা সদরঘাট যেতে হলে মুড়ির টিন ছাড়া উপায় ছিল না। বাদুর ঝোলা কিংবা মুড়ির মতো ভরাট হয়ে যে ভাবেই হোক সে সময় এই বাসটিই ছিল যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। বাসটিকে শেষবারের মতো ’৯০-এর দশকের প্রথম দিকে দেখা গেছে। যা আজ হারিয়ে যাওয়া এক ইতিহাস।
নারায়ণগঞ্জ শহরের ১নং রেলগেট এলাকার ফলপট্টি, পুরনো বোস কেবিন ও মিষ্টি মুখের উল্টো দিক থেকে ছাড়ত বাসগুলো। পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে থেকে যাত্রী নিয়ে পুরনো নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা সড়ক হয়ে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করতো। ফলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রিয় বাহন ছিল এটি। যাওয়ার সময় শহরের দিগুবাবুর বাজারের ভেতর দিয়ে (মীর জুমলা সড়ক) বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক বিবি রোড ও চাষাড়া চত্বর হয়ে ঢাকায় যেত।

গুলিস্তান ও ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে থেকে ছাড়ত বাসটি। ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের ভাড়া ছিল ‘ছ আনা বা আট আনা’। এই ‘মুড়ির টিন’ বাস চালুর সমযকাল ছিল ব্রিটিশ আমলে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও এই বাস ঢাকা-ডেমরা, ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী-তারাবোসহ বিভিন্ন রুটে চলাচল করতো।
মুড়ির টিন নামকরণ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে এ অঞ্চলে মিত্রবাহিনীর ব্যবহৃত ট্রাক ও গাড়ি নিলামে বিক্রি হয়। ট্রাকগুলো কাঠের বডিতে বাসের আদল দিয়ে নাক বোঁচা করে তৈরি হয়। বাইরের দিকে কাঠের বডির ওপর মুড়ে দেওয়া হয় টিন। সে থেকেই বাসটির নাম হয় মুড়ির টিন। আবার অনেকের মতে, মুড়ির মতো ভরাট হয়ে অধিক যাত্রী ওঠানোর কারণে নাম হয়েছে মুড়ির টিন।
কেমন ছিল মুড়ির টিন
নারায়ণগঞ্জে ঘোড়া আর গরুর গাড়ি থাকলেও গণপরিবহন হিসেবে মুড়ির টিনই ছিল ভরসা। ইংল্যান্ড থেকে আমদানি করা হতো ইঞ্জিন। কাঠের বডি তৈরি করতো স্থানীয় মিস্ত্রিরা। ভেতরে চারধারে বেঞ্চের মতো করে সিট বসানো হতো। ২০-২২ জন বসার সুযোগ পেত। ৫০ জনের অধিক যাত্রী দাঁড়িয়েই থাকত। স্টিলের জানালার পুরোটাই খোলা যেত বলে বাতাস চলাচলের সুযোগ ছিল বেশি। প্রথমদিকে হাতে হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে স্টার্ট দিতে হতো। পরে হ্যান্ডেলের পরিবর্তে চাবি সংযোজন করা হয়। গাড়ির গতি থাকত ঘণ্টায় ১৫-২৫ কিলোমিটার। স্টিয়ারিং ছিল শক্ত। পিতলের হর্নে বসানো রাবারের গোল বলে চাপ দিয়ে বাজানো হতো।
বাসের সামনের দিকটার সিটগুলো বরাদ্দ ছিল মহিলা যাত্রীদের জন্য। তার পরের সারিগুলো ছিল পুরুষদের দখলে। বাসের পেছন দিকটায় যারা বসত তারাই বুঝত আসল মজা! ব্রিটিশ আমলের লোকাল বাস, সামনের আর জানালার কাঁচ ছাড়া বাকি সব পিওর কাঠের তৈরি। পেছনের কারোর মাথা পর্যন্ত ঠেকে যেত ছাদে গিয়ে। কন্ডাক্টরের কাঁধের একপাশে থাকত লম্বা ফিতাযুক্ত চামড়ার ব্যাগ। টাকা, পয়সা ও টিকিট রাখার জন্য আলাদা তিনটি পকেট ছিল তাতে।
মুড়ির টিন বাসের স্থানে বর্তমানে অত্যাধুনিক বাসের প্রচলন এখন সারাদেশে। এসি, নন এসি, সরকারি বাস রাজপথে চোখে পড়ে। রাজধানী ঢাকাতেই এখন কম্ফোর্টেবল বাস চলাচল করে। পাশাপাশি লক্কড়-ঝক্কড় বাসও রাস্তায় চলে। জীবনের প্রয়োজনে বদলে যাওয়া শুধু ট্রান্সপোর্টই নয়, আরাম অনুষঙ্গ হিসেবে গণ্য।
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের স্মৃতিতে মুড়ির টিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com