বিডি ঢাকা ডেস্ক
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে আদালতে হেরে গিয়েছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। কারণ তিনি ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তির পক্ষে ছিলেন। তার প্রত্যাশা ছিল, রায় শিক্ষার্থীদের ভর্তির পক্ষে আসবে।
মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল থেকেই রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হলেও মাঝে শুধু এক ঘণ্টা বিরতি ছিল। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টায় রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায় ঘোষণার পুরো সময় এজলাস কক্ষেই ছিলেন ব্যারিস্টার সুমন।
ব্যারিস্টার সুমন রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি মানুষ তো! আমি একা হেরে গেলে যতটা কষ্ট পাই তার চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট পাই যখন দেখি আমার সঙ্গে থাকা মানুষগুলো হেরে যায়। তবে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেব।
মঙ্গলবার রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। তদন্তের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। তদন্ত কমিটিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের একজন প্রতিনিধি ও বুয়েটের একজন আইটি এক্সপার্টকে রাখতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিলই থাকবে এবং পাশাপাশি প্রথম শ্রেণিতে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত বলেছেন, ১৬৯ শিশুর ভর্তি নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এক্ষেত্রে অভিভাবকরাও দায় এড়াতে পারেন না।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, আইনজীবী শামীম সরদার। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম। ।
গত ১৯ মে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯ শিশুর ভর্তি কেন বাতিল হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা ছিল। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯ জন ছাত্রীর ভর্তি বাতিল চেয়ে দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক একটি রিট দায়ের করেন। তাদের অভিযোগ হলো, নির্দিষ্ট বয়সের বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে স্কুলেটিতে। এরপর ২৩ জানুয়ারি রুল জারিসহ ভর্তি বাতিলের আদেশ দেন আদালত। পরে মাউশির নির্দেশনায় ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়।
এরপর ভর্তি বাতিলের বৈধতা নিয়ে ১৩৬ জন অভিভাবক আরেকটি রিট দায়ের করেন। এ নিয়ে গত ২৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল জারি করেন। আলাদা রুলের একসঙ্গে শুনানি শেষে রায়ের জন্য নতুন এই দিন (মঙ্গলবার) ধার্য করা হয়।