নিজস্ব সংবাদদাতা : ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসরে ১৬ মিলিয়ন ডলার বা ১৩৮ কোটি টাকার রফতানি আদেশ এসেছে। একই সঙ্গে এক মাসে এ মেলায় পণ্য বিক্রি থেকে ভ্যাট আদায় করা হয়েছে দেড় কোটি টাকা।
গতকাল রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন ও বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেলার ১৬ মিলিয়ন ডলার পণ্যের রফতানি আদেশ এসেছে। এ সময়ে মোট ৪০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। এ বিক্রি থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ভ্যাট সংগ্রহ হয়েছে।
বাণিজ্য মেলায় অবস্থিত কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকার (পূর্ব) অস্থায়ী অফিস স্টলগুলো থেকে ভ্যাট আদায়ের কাজটি করেছে। এছাড়া ইসলামী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক অনলাইনে ভ্যাটের চালান সংগ্রহ করেছে। আগে এটি ম্যানুয়ালি করা হতো।
এবার ইসলামী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের স্টলে অটোমেটেড চালান সিস্টেমের (এসিএস) মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ভ্যাট, ট্যাক্স ও বিভিন্ন ফি জমা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিদিনের লেনদেনের ভ্যাট-ট্যাক্সসহ অন্যান্য ফি এ দুই স্টলে নিয়মিত জমা দিতে পারতেন।
অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সার্বিক অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী দিকনির্দেশনা ও সিদ্ধান্তের ফলে কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতি সচল রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, অনেক প্রতিকূল পরিবেশে এবারের বাণিজ্য মেলা শেষ হলো। দেশের রফতানি বাড়ানোর জন্য সরকার সব পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বছর ৫১ বিলিয়ন ডলার রফতানি করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। ২০২৪ সালে দেশের রফতানি ৮০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। তখন এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে আমাদের অনেক বাণিজ্য সুবিধা থাকবে না। আমাদের প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে হবে। তখন পিটিএ অথবা এফটিএ স্বাক্ষর করে বাণিজ্য সুবিধা নিতে হবে। চলতি বছর আমরা চারটি দেশের সঙ্গে এসব বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য কাজ করছি।
এবার প্রথম রাজধানীর উপকণ্ঠে নতুন শহর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) শুরু হয় মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। গত ১ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়। এবারই প্রথম স্থায়ী ভেনুতে বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আগে এ মেলা হতো রাজধানীর আগারগাঁওয়ে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬০টি স্টল এবং ১৫টি ফুড স্টল দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল, যা অন্য বছরের তুলনায় অর্ধেক। তাছাড়া মেলায় ১১টি বিদেশী স্টল অংশগ্রহণ করে।