বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার পাচামাড়িয়া স্কুল মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছে প্রায় ১১ জন শিক্ষার্থী।
গতকাল রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের, পচামাড়িয়া স্কুল মাঠে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায় যে, এই ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবিতে ও এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র বদলের জন্য, আজ (৫ সেপ্টেম্বর) সাতবাড়িয়া হাই স্কুলের সকল শিক্ষার্থীরা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। গতকাল রবিবার উপজেলার শীলমাড়িয়া ইউনিয়নের পচামাড়িয়া হাই স্কুল মাঠে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ও সাতবাড়িয়া স্কুলের খেলা ছিলো। সকালে দু’দলের সাথে খেলে সাতবাড়িয়া স্কুল জয়লাভ করে, পরে গতবারের চ্যাম্পিয়ন পচামাড়িয়া হাই স্কুলের সাথে সাতবাড়িয়া স্কুলের খেলা শুরু হয়। প্রথমার্ধের খেলা শুরু থেকে মার মুখি অবস্থানে ছিল পচামাড়িয়া হাই স্কুল এর শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয়ার্ধের খেলার সময় হঠাৎ করে সাতবাড়িয়া স্কুলের এক শিক্ষার্থী খেলোয়ার কে মাথায় ঘুষি মেরে ফেলে দেয় পচামাড়িয়া হাই স্কুলের সাতারপাড়া গ্রামের শিক্ষার্থী মশাল।
পরে সাতবাড়িয়া স্কুলের তিনজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে রেফারি জামিলুর রহমানের কাছে মাঠের মধ্যে জানাতে গেলে, বাহিরে থেকে কেউ একজন উস্কানি দিয়ে বলে জামিলুর রহমান স্যারকে মারধর করা হচ্ছে, তখন এলাকাবাসী সহ একটা পক্ষ এসে সাতবাড়িয়া হাই স্কুলের শিক্ষার্থী খেলোয়াড়দের ওপর হামলা চালায়। এতে করে সাতবাড়িয়া হাই স্কুলের প্রায় এগারো ১১ জন শিক্ষার্থী দারুন ভাবে আহত হন।
সরেজমিনে গিয়ে সাতবাড়িয়া হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরদের সাথে কথা বললে তারা জানান, খেলার শুরু থেকে পচামাড়িয়া হাই স্কুলের খেলোয়াররা আমাদের খেলোয়ারদের কে মেরে ফাউল করে খেলছিলেন এতে করে রেফারি কোন লাল কার্ড বা হলুদ কার্ড প্রদর্শন করেনি। পরে আমাদের আরেক খেলোয়ারকে মাথায় ঘুষি মেরে ফেলে দেওয়ার পরেও রেফারি লাল কার্ড বা কোন সাজা দেয়নি। আমাদের ওপর ব্যাপ ক অন্যায় করা হয়েছে। আমাদের খেলোয়ারদের ব্যাপক মারধর করা হয়েছে এই ঘটনার সুস্থ তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।
সাতবাড়িয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন মুঠো ফোনে জানান, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে উপজেলায় একটি আলোচনা হয়েছে, উপজেলা থেকে বলা হয়েছে আমাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় কোন বাধা বিঘ্ন আসবে না তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে ঘটনার সুস্থ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
পচামাড়িয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মধুসুদন মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, হয়তো আমার এখানে ব্যর্থতা রয়েছে, আমি আমার ছাত্রদেরকে সামাল দিতে পারিনি, তাছাড়া ছাত্রদের খেলাধুলার মধ্যে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কেন ঘটবে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দু পক্ষের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে। তবে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাতবাড়িয়া হাই স্কুলের ছাত্র অভিভাবকদের একটা দাবি ছিলো, পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তনের। এই বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লায়লা আখতার জাহানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সামনে পরীক্ষার সময় খুবই অল্প। এই অল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। সকল নিরাপত্তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের আগামীতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এবং অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও সমস্যাটির দ্রুত সমাধানের জন্য চেষ্টা চলছে।