রাজশাহী সংবাদদাতা : রাজশাহীর দুর্গাপুরে করোনায় আক্রান্ত সোহরাফ আলী ও তার স্ত্রী মিম আক্তারকে আমবাগান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে দিল পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সোহরাফের বাড়ি উপজেলার আলীপুর সোনারপাড়া এলাকায়। সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর গত মঙ্গলবার করোনা পরীক্ষা করালে সোহরাফের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। খবর শুনে তাৎক্ষণিক ভাড়াটিয়া বাড়ির মালিক তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর তারা নিজ বাড়িতে উঠার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে বাড়ির পাশে একটি আমবাগানের টিনশেডের তলে আশ্রয় নেয়।করোনা পজিটিভ সোহরাফ আলী বলেন, তিনি একজন অটো মেক্যানিক। আলীপুর গ্রামের ছাতনী পাড়ায় মোমিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে স্ত্রীসহ ভাড়া থাকেন। গত কয়েক দিনধরে সর্দিজ্বরে ভুগছিলেন। এরপর গত মঙ্গলবার তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে করোনার পরীক্ষা করান। তার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। খবর শোনার পরই তার বাড়ির মালিক ১০মিনিটের মধ্যেই বাড়ি থেকে নেমে যেতে বলেন। এরপর তিনি তার নিজবাড়ি আলীপুর সোনারপাড়ায় আসলে পরিবারের লোকজন তাকে বাসায় উঠতে বাধা দেয়। নিরুপায় হয়ে তিনদিন ধরে বাড়ির পাশে আমবাগানে টিনশেডের চালার নিচে ছিলেন।
সোহরাফ বলেন, তার স্ত্রী মিমও বর্তমানে ভীষণ জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত। তিন দিন থেকে আমরা আমবাগানে আছি। কেউ কাছেও আসে না। বৃহস্পতিবার ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে থানার ওসি তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠান। পরে তারা আমার বাড়ির একটি ঘরে তুলে দিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন ঘোষণা করেন। এবং দুজনকেই ঘর থেকে বাহির হতে নিষেধ করেন। এছাড়াও প্রশাসন ত্রাণ হিসেবে আমাদের প্রায় দুই সপ্তাহের খাদ্য সামগ্রী দিয়েছে।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাশমত আলী বলেন, করোনা পজিটিভ সোহারাফকে ভাড়া বাড়ি থেকে বাহির করে দেওয়ার পর তার বাবা মা ও তার নিজ বাড়িতে জায়গা দিচ্ছিল না। তারা নিরুপায় হয়ে বাড়ির পাশে একটি আমবাগানের নিয়ে আশ্রয় নিয়ে ছিল। ঘটনাটা খুবই অমানিক ছিল।
তিনি বলেন, বিষয়টি ৯৯৯ এর মাধ্যমে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে থানার জরুরি অফিসার পাঠানো হয়। পরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সোহরাব আলীকে তার নিজ বাড়িতে আলাদা ঘরে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে তার দুই সপ্তাহের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।