রাজশাহী সংবাদদাতা:রাজশাহীতে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে ব্যবহৃত কিটের স্বল্পতার কারণে নমুনা পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। রোববার সকালে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবারই রাজশাহী মহানগরে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের টেস্টিং কিট শেষ হয়ে যায়। এ কারণে গত শুক্রবার থেকে রাজশাহী মহানগরে কোনো টেস্ট কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে উপজেলাগুলোতে এখনও টেস্টিং কিট পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। কিন্তু উপজেলায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম থাকায় টেস্টের পরিমাণও কম।’
রাজশাহী সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরে কোনো র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট হয়নি। তবে এই তিন দিন আরটিপিসিআর মেশিনে মোট ১ হাজার ৩০৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে মোট ৪৫৫ জনের করোনা পজিটিভ রেজাল্ট মিলেছে। অন্যদিকে উপজেলায় র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট হয়েছে মোট ৪৯২টি, এর মধ্যে ১৩১ জনের রেজাল্ট পজিটিভ এসেছে। গত তিন দিনে জিন এক্সপার্ট টেস্ট হয়েছে ৬৪ জনের মধ্যে ২৪ জনের পজিটিভ রেজাল্ট এসেছে।
যেখানে রাজশাহী জেলায় একদিনেই প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়, সেখানে গত তিন দিন মিলিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ৮৬২ জনের। এতে শনাক্ত হয়েছেন ৬১০ জন। মূলত রাজশাহী মহানগরে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট হয় সবচেয়ে বেশি। কিন্তু গত তিন দিন যাবত কিট শেষ হয়ে পড়ায় নগরীর বিভিন্ন বুথ বন্ধ গেছে। তাই করোনা পরীক্ষা কার্যক্রমও স্থগিত রয়েছে।
নগরীর কাজলা এলাকার বাসিন্দা আক্তার হোসেন (২৮) সপ্তাহ খানেক আগে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন তিনি। এক সপ্তাহ পর দ্বিতীয়বার টেস্ট করিয়েছেন, তাতেও পজিটিভ আসে। তবে এখন তিনি বেশ সুস্থ। তবে কাজে যোগদানের জন্য করোনা টেস্ট করতে হবে। কিন্তু টেস্ট কিট না থাকায় তিনি করোনা টেস্ট করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘নগরীতে টেস্ট বন্ধ। তাই রামেকে গিয়েছিলাম টেস্ট করাতে। তবে রামেক থেকে বলছে, টেস্ট করাতে হলে ভর্তি হতে হবে। অন্যথায় টেস্ট করা হবে না। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই রয়েছি।’ রাজশাহীর জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যে, আপাতত করোনা পরিস্থিতি যে পর্যায়ে রয়েছে তা শুধুমাত্র চলমান বিধিনিষেধ ও করোনা পরীক্ষার জন্যই কিছুটা স্থিতিশীল। করোনা পরীক্ষা, করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনসচেতনতা ও আত্মসচেতনতা তৈরি করতে সক্ষম। কারণ, একজন মানুষ আক্রান্ত হলে সে নিজে আইসোলেশনে যায়। এতে সংক্রমণ ছড়ায় না। সেক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষা বন্ধ হলে বা কার্যক্রম ব্যাহত হলে সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। সুতরাং, করোনা পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘রাজশাহী মহানগরে প্রায় ২০ হাজার মানুষের পরীক্ষা করেছি। তবে কিট শেষ হয়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কিটের জন্য আমরা সিভিল সার্জন দফতরে চিঠি দিয়েছি।’ রাসিকের চিঠির বিষয়ে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন মো. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘রাসিক স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রেরিত চিঠিটি আমরা পেয়েছি। রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে কিটের চাহিদা চেয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই কিট পেয়ে যাবে।’
তিনি যোগ করে বলেন, ‘মহানগরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও রাজশাহীর উপজেলাগুলোতে কিট থাকায় পরীক্ষা চলছে।’