অনলাইন নিউজ : একসঙ্গে করোনাভাইরাসের তিন ডোজ টিকা নেওয়া নারায়ণগঞ্জের সৌদি প্রবাসী ওমর ফারুক খোঁজ মিলল। বর্তমানে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
গত মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) ওমর ফারুক একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, বিএসএমএমইউ টিকাদান কেন্দ্রের তিনটি বুথ থেকে তাকে তিনবার টিকা দেওয়া হয়েছে তাকে।
সৌদি আরবে যাওয়ার আগে করোনা প্রতিরোধী টিকা নিতে সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ওমর ফারুক। তবে না বুঝেই তিনটি বুথ থেকে তিন ডোজ টিকা নেন তিনি। এরপর একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে বলেন, ‘আমি যখন প্রথমে টিকাকেন্দ্র ঢুকলাম, তখন এক জন ইশারা দিয়ে ডান সাইটে যেতে বললেন। ওখানে গিয়ে এক ডোজ টিকা নিলাম। টিকা দিয়ে উনি সামনের দিকে যেতে বললেন। সামনের ব্যক্তি দ্বিতীয়বার টিকা দিয়ে বললেন, আপনি সামনে যান। আরও সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে একটি চেয়ারে বসলাম। উনি কিছু জিজ্ঞেস না করে আরও এক ডোজ টিকা আমাকে দিয়েছেন। পরে বাইরে এসে লোকদের জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কয়বার টিকা দিয়েছেন, তারা বললেন, একবার।’
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে একই দিনে তিন ডোজ টিকা দেওয়ার যে খবর রটেছে তা ঠিক নয় বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, তার (ওমর ফারুক) হাতে তিনটি টিকা নেওয়ার দাগ মিলেছে। ভুল করেই তাকে এই টিকা দেওয়া হয়েছিল। তবে, এখন থেকে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া তিন ডোজ টিকা নেওয়া ওমর ফারুককে বর্তমানে হাসপাতাল থেকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বাড়তি টিকা নেওয়ার কারণে তার কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখনো দেখা দেয়নি। তবে তিন ডোজ টিকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই, বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে এলাকাবাসী ক্ষোভ জানিয়ে বলেছেন, ওমর ফারুক তিনটি টিকা নিয়ে নিশ্চয়ই কোনো অপরাধ করেননি। তিনি চোর কিংবা ডাকাত নন যে তাকে নিয়ে লুকোচুরি করতে হবে। তাকে চিকিৎসা করা হোক, কিন্তু তার চিন্তায় তার মা অসুস্থ হয়ে গেছেন। অন্তত তার বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
এছাড়া সোমবার (২৬ জুলাই) টিকা নেওয়ার পর থেকে ওমর ফারুকের শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো অবনতি ঘটেনি বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তারা জানিয়েছেন, সামান্য জ্বর অনুভব করা ছাড়া ওমর ফারুকের শরীরে তেমন কোনো সমস্যা তারা দেখেননি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য একজনকে দুই ডোজ টিকা দিতে হবে। প্রথম ডোজ নেওয়ার চার সপ্তাহ বা আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়। সাধারণত টিকা দেওয়ার পর টিকা কার্ডে সেটি উল্লেখ করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী টিকা নেওয়ার পর প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এমনকি টিকা নেওয়া ব্যক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখার জন্য একজন চিকিৎসকের নম্বর দেওয়া হয় টিকা কার্ডে। কোনো ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে মোবাইল ফোনে জানানোর পরামর্শ রয়েছে কর্তৃপক্ষের।