অনলাইন নিউজ : গার্মেন্টসসহ সব ধরনের শিল্প-কারখানা খুলে দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন মালিকরা। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করে ভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা এই দাবি জানান।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান শিল্প-কারখানা খুলে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বলে জানান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে বলেও জানান তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমরা ক্যাবিনেট সচিবের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম, সব ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে। এই যে লকডাউনটা আছে, এটা থেকে যেন সমস্ত ধরনের শিল্পকে কাজ করতে সুযোগ দেয়া হয়। এটাই আমরা উনার কাছে অনুরোধ করতে আসছি।’
অনুরোধের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কী জানানো হয়েছে- জানতে চাইলে ফারুক হাসান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে উনার (মন্ত্রিপরিষদ সচিব) মাধ্যমে এই অনুরোধটা আমরা করেছি। তিনি (মন্ত্রিপরিষদ সচিব) বলেছেন, উনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। কথা বলে এই ডিসিশানটা খুব তাড়াতাড়ি দেবেন। করোনা পরিস্থিতি, সংক্রমণ, মৃত্যু সবকিছু মাথায় নিয়ে সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সরকার এটা বিবেচনা করবে বলে আমরা আশাকরি।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘পোশাকশিল্প শুধু না, সমস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে আমরা এসেছি। এটার প্রয়োজনীয়তা আপনারা জানেন। সমস্ত শিল্পের সঙ্গে অনেক কিছু ইনভলভড। সেই কারণে আমরা এটা আবারও অনুরোধ করেছি। যেন এটাকে লকডাউনের বাইরে রাখা হয়, যেন বিষয়টা বিবেচনা করা হয়।’
কোনো নির্ধারিত দিন থেকে খুলে দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট দিন নয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। যেহেতু ২৩ তারিখ থেকে লকডাউনে সবকিছু বন্ধ আছে, ঈদের আগে অলমোস্ট ১৮/১৯ তারিখ থেকে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে, সবকিছু অনেকদিন বন্ধ থাকার কারণে সবকিছুরই সাপ্লাই চেইনে একটা শর্টেজ হয়।’
‘আমাদের এক্সপোর্ট যেটা আছে, তার সঙ্গে সঙ্গে লোকালও এবং পোর্টেও অনেক ইমপোর্টেড মাল আসে। জাহাজগুলো আনলোড করা, মালগুলো পোর্টে রাখার জায়গা থাকছে না। সে কারণে যদি ফ্যাক্টরিগুলো, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো না খুলে পোর্ট থেকে কন্টেইনারে মাল রিলিজ না করলে একটা জটিলতার দিকে চলে যাচ্ছে। তাই সবকিছু বিচার বিবেচনা করে সব ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার অনুরোধ করেছি।’
গার্মেন্টস শ্রমিকদের করোনা টিকা দেয়ার বিষয়ে কিছু বলেছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এই অনুরোধটাও করেছি। যেহেতু সরকার টিকার ব্যবস্থা করেছে এবং আমরা অলরেডি ঈদের আগে ১৮ ও ১৯ তারিখ ৩০ হাজারের মতো কর্মীকে টিকা দিয়েছি। শ্রমিকরা যখন ফ্যাক্টরিতে থাকে তখন তারা টিকা দিতে নিরাপদ ফিল করে। আর যখন তারা গ্রামে থাকে তখন তারা দিতে চায় না।’
‘আমরা আরেকটা কথা বলেছি। শ্রমিকরা গ্রামে থাকলে সেখানে ডাক্তার বা ওষুধের দোকান বা হসপিটাল নেই। কিন্তু যে ফ্যাক্টরিগুলো আছে, যার আশেপাশে তারা থাকে, সেখানে যদি থাকে তাহলে শ্রমিকদের আমরা নিরাপত্তা দিতে পারি’ বলেন ফারুক হাসান।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৩ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। এই বিধিনিষেধ চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত। বিধিনিষেধে খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহন-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া সব শিল্প-কারখানা বন্ধ রয়েছে।