কোন বয়সে মা হবেন? ঠিক কত বয়সে সন্তান নেয়া সবচেয়ে ভাল? এমন প্রশ্ন মনে আসতেই পারে। কিন্তু কোনো সময়ই ঠিক বলে মনে হয় না। কারো কারো মনে হয়, ৩৫ ছুঁলে বেশি হয়ে যাবে বয়স। তখন শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আবার ৩০-এর নীচে হলে সমস্যা অন্য রকম। কত কাজ করে ওঠা হবে না। তার আগেই সন্তানের সব দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু এমন তো কত কথাই হয়ে থাকে। তা দিয়ে কি আদৌ পরিবার বাড়ানোর পরিকল্পনা করা যায়? নাকি বিজ্ঞানের উপর ভরসা করেই ঠিক করবেন পরবর্তী পদক্ষেপ?বিশের কোঠায় সন্তান ধারণের জন্য একজন নারী সবচেয়ে উর্বর থাকেন। কিন্তু গর্ভাবস্থা এবং অভিভাবকত্ব সামলানোর জন্য এই বয়সটি সবার জন্য আদর্শ নাও হতে পারে। এমনকি কেউ কেউ ৩০ বছর বয়সেও তৈরি থাকতে না পারেন। সে কারণে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ এবং মায়েরা সকলেই একমত হন গর্ভবতী হওয়ার সে অর্থে সঠিক কোনো বয়স নেই।
কিন্তু এ বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলে? মা হওয়ার আদৌ কোনও সঠিক বয়স হয় কি?
সম্প্রতি একটি গবেষণায় সেই বয়সের কথা উঠে এসেছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে যে, ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত সময় হল মা হওয়ার জন্য সবচেয়ে ভাল। এই সময়ের মধ্যে মেয়েদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।
আমেরিকায় এক দল স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের গবেষণায় আরও ধরা পড়েছে, ৩২-এর পর থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে মহিলাদের সন্তানধারণের সম্ভাবনা। হরমোনও সঙ্গ দেয়া কমিয়ে দেয়।
সমীক্ষা বলছে, ৩৫ বছরে পর ডিম্বাণুর সংখ্যা কমে যায় আরও বেশি। এ ছাড়া এ বয়সে গর্ভধারণের পরে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, প্রসব-পূর্ব রক্তক্ষরণ ও প্রসবকালীন জটিলতা বেড়ে যায়।
তবে, সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো, জন্মগত ত্রুটিযুক্ত এবং ডাউন সিনড্রোম সন্তান জন্মদানের হার অনেক বেশি হয়, যদি মায়ের বয়স বেশি থাকে। এসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসবে হার কমে যায় এবং অস্ত্রোপচারে জন্ম বেশি হয়।
তবে সুস্থ শিশু জন্মদানের জন্য স্বামী-স্ত্রী দুজনের বয়সের দিকেই খেয়াল রাখা উচিত। নারীদের ৩০ বছরের মধ্যে এবং পুরুষদের ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথম সন্তান নিয়ে নেওয়া ভালো। তারপরও একটু বেশি বয়সে সন্তান নিতে হলে একজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে থাকা ভালো, কেননা এই গর্ভধারণগুলোতে জটিলতা হতে পারে।