করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো আগামী ৫ অক্টোবর থেকে খুলছে। অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে সেদিন সকাল আটটা থেকে স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের হলে তোলা হবে।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।
পাশাপাশি অছাত্রদের হলে ওঠা ঠেকানো ও অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতে নজরদারি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সভাপতিত্ব করেন।সিন্ডিকেট সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, সিন্ডিকেট প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি ও একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও সেমিনার গ্রন্থাগারগুলো সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। একই শর্তে এই দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আগামী ৫ অক্টোবর সকাল আটটা থেকে হলে তোলা হবে।
মাকসুদ কামাল বলেন, ‘অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্রের যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চিতে সিন্ডিকেট সভায় নজরদারি আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ অক্টোবর হল খোলার পর স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শ্রেণি ও পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। পরীক্ষা শেষে তারা চলে যাওয়ার পর মধ্য নভেম্বরে প্রথম থেকে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে উঠিয়ে সরাসরি পরীক্ষা ও শ্রেণি কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা পরিষদের সভা থেকে নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে টিকার ব্যবস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার জন্য লোগোসংবলিত একটি মাস্কের ব্যবস্থা করার যে প্রস্তাব এসেছিল, তাও সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে।
এ ছাড়া হল ও ক্যাম্পাস খোলার পর স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে পালনীয় বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা নীতিমালা ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরের’ (এসওপি) কঠোর প্রতিপালনের সিদ্ধান্তও সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে।
এসওপি নীতিমালার আওতায় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের কিছু নির্দেশনা মানতে হবে৷ এগুলোর মধ্যে আছে কক্ষের ফ্লোরে ঘুমানো যাবে না, কক্ষের আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে, বাইরে গেলে মাস্ক পরতে হবে, কোনো অতিথি আনা যাবে না, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, হাত জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে, হাঁচি-কাশির ক্ষেত্রে কনুইয়ের ভাঁজ বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢাকতে হবে প্রভৃতি।
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ও হলগুলো। এই দীর্ঘ ছুটির সুযোগ নিয়ে হলের ‘গণরুম সংস্কৃতি’ থেকে বের হয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ অক্টোবর হল খোলার পর স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শ্রেণি ও পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। পরীক্ষা শেষে তারা চলে যাওয়ার পর মধ্য নভেম্বরে প্রথম থেকে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে উঠিয়ে সরাসরি পরীক্ষা ও শ্রেণি কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ও হলগুলো৷ এই দীর্ঘ ছুটির সুযোগ নিয়ে হলের ‘গণরুম সংস্কৃতি’ থেকে বের হয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল কর্তৃপক্ষ গণরুমের শিক্ষার্থীদের তালিকা করে খালি সিটে তাদের খসড়া বরাদ্দ দিয়ে রেখেছে৷ গণ রুমের শিক্ষার্থীরা হলে ফেরার পর এসব সিটের বরাদ্দ-তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এরপর নির্ধারিত ফি জমা দিলে তাদের গণরুম থেকে বরাদ্দ হওয়া কক্ষে তুলে দেবে কর্তৃপক্ষ অছাত্র ও বহিরাগত ব্যক্তিদের হলে আর উঠতে দেওয়া হবে না। গণ রুমের নিয়ন্ত্রক ছাত্রলীগসহ সব ছাত্রসংগঠনই এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।