টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা হলো দুঃস্বপ্নের মতো। আসরের প্রথম পর্বে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের।
রবিবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৬ রানে হারিয়েছে স্কটল্যান্ড। ১৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭ উইকেটে ১৩৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
ব্যাটে বলে সেরা ক্রিকেট খেলেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে স্কটল্যান্ড। যাদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই হার মানল বাংলাদেশ।
আসলে বাংলাদেশ এদিন খেলেছে চূড়ান্ত হতাশ করা ক্রিকেট। বিশেষ করে ব্যাটারদের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এমন হতাশার শুরুর পর বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে কত দূর যাবে এ প্রশ্নও এখন উঠে যাচ্ছে।
এদিন গ্রুপের অন্য ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে দাপুটে ক্রিকেট খেলে ১০ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে ওমান। মঙ্গলবার যাদের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে টাইগাররা।
মূল পর্ব বা সুপার টুয়েলভ পর্বে খেলতে হলে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে এখন জিততেই হবে বাংলাদেশকে।
এদিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার সুবিধা করতে পারেননি। দুজনই ব্যক্তিগত ৫ রান করে করতে পেয়েছেন। ১৮ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। ৮.৫ ওভারে দলীয় ৫০ রান পূরণ করে বাংলাদেশ। ১০ ওভার শেষে টাইগারদের স্কোর দাঁড়ায় ৫৯/২।
উইকেট হাতে থাকায় বাংলাদেশই তখন এগিয়ে। তবে ১২ ও ১৪তম ওভারে সাকিব ও মুশফিককে তুলে নেন ক্রিস গিভস। যিনি ব্যাট হাতেও ঝোড়ো ইনিংস খেলে চাপ কাটিয়ে দলকে এনে দিয়েছিলেন লড়াকু পুঁজি।
সাকিব ২৮ বলে ২০ এবং মুশফিক ৩৬ বলে ৩৮ রান করেন। এই দুজনের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন জুটি বাঁধলেও সময়ের সাথে সাথে চাপ বাড়ছিল টাইগারদের ওপর।
শেষ ৫ ওভারে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ৫৪ রানের সমীকরণ দাঁড়ায়। ১৬তম ওভারে বাংলাদেশ মাত্র ৫ রান তুলতে পারে। ১৭তম ওভারে ১২ রান আসলে কিছুটা আশা তৈরি হয়। একটি করে চার হাঁকান মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ। কিন্তু ১৮তম ওভারে মার্ক ওয়াটের বলে ফিরে যান আফিফ। ১২ বলে ২ চারে ১৮ রান করেন তিনি।
শেষ ২ ওভারে ৩২ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় বাংলাদেশের সামনে। সেই সমীকরণ আরো কঠিন হয়ে যায় ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে নুরুল হাসান সোহান ফিরে গেলে। ছক্কার চেষ্টার বাউন্ডারি লাইনে ধরে পড়েন সোহান (২)। ব্র্যাড হুইলের বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন ক্যালাম ম্যাকলেয়ড।
তবে পরের বলে মাহমুদউল্লাহ ছক্কা হাঁকান হুইলকে। এক বল বিরতিতে আরেক ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। ২২ বলে ২৩ রানে ফিরতে হয় মাহমুদউল্লাহকে। বাংলাদেশের সব আশাও আসলে শেষ সেখানে।
জিততে হলে শেষ ওভারে ২৪ রান করতে হতো বাংলাদেশকে। সাইফউদ্দিন একটি চার, মেহেদী হাসান একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান। তবে সমীকরণ মেলানো হয়নি বাংলাদেশের।
১৯তম ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে দেওয়ার কাজটা করেন ব্র্যাড হুইল। সর্বাধিক ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ক্রিস গ্রিভস নিয়েছেন জোড়া উইকেট।
এর আগে বোলিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। ১১.৩ ওভারে ৫৩ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিল প্রতিপক্ষের। তবে ক্রিস গ্রিভসের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে সেই চাপ কাটিয়ে ৯ উইকেটে ১৪০ রানের পুঁজি গড়েছে স্কটিশরা। শেষ ৫ ওভারে ৫৩ রান তুলে দলটি।
২৮ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন গ্রিভস। ১৭ বলে ২২ রান করেন মার্ক ওয়াট। ওপেনার জর্জ মানজি করেন ২৩ বলে ২৯ রান। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন ক্রিস গ্রিভস।