আসন্ন দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আরো সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলার এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১২ জনের প্রাণহানী হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-সমর্থক ও কর্মী।
সূত্র জানায়, সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আরো কঠোর হতে দিকনির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। বৃহস্পতিবারও পুলিশের সবকটি রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে।
২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় নিহত হয়েছিল ১১৭ জন।
পুলিশ সদর দপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, যে এলাকায় ইউপি নির্বাচন হবে সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশের পাশাপাশি আধিপত্য বিস্তার, হামলা-পাল্টা হামলা, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ সন্ত্রাস ও কেন্দ্র দখলের মতো অপরাধ ঘটতে পারে। এ আশঙ্কায় সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত অপরাধ পর্যালোচনা সভায় আইজিপি মাঠ পুলিশকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘ইউপি নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার, বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। তাই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে।
ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপের নির্বাচন শেষে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ ও ২৮ নভেম্বর। এরই মধ্যে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে এই দুই ধাপের মনোনিতদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে দল আওয়ামী লীগ। দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৮ ও তৃতীয় ধাপে ১০০৭ ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তা ছাড়া ২৮ নভেম্বর দেশের ১০ পৌরসভায়ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১৭ অক্টোবর চিৎমরম ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। ওই ঘটনার পর এই ইউনিয়নের নির্বাচন পিছিয়ে ২৮ নভেম্বর নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। কাপ্তাইয়ের বাকি তিন ইউনিয়নের নির্বাচন আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইউপি নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর মাগুরা সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়নে নির্বাচনী সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। প্রথম ধাপের নির্বাচনে কক্সবাজারের মহেশখালীতে সহিংসতায় নিহত হন দুজন আর বরিশালের গৌরনদীতে নিহত হন দুজন।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার নরসিংদীর রায়পুরায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কাচারিকান্দি এলাকার মলফত আলীর ছেলে সাদিব মিয়া এবং আসাদ মিয়ার ছেলে হিরণ মিয়া খুন হন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো আটজন।
সকালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় দুর্বৃত্তরা তার সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। নিহত আবু ছায়েদ ভূঞা রিপন (৪৮) উপজেলার মিরওয়ারিশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১ নম্বর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালুয়া চাঁদপুর গ্রামের ভূঞা বাড়ির মৃত রফিক উল্লাহ ভূঞার ছেলে। ধারণা করা হচ্ছে, ইউপি নিবাচনের বিরোধের জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
গত ২৬ অক্টোবর রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন।