আল্লাহ তাআলা পবিত্র। তিনি পবিত্রতাকে ভালোবাসেন। যারা পবিত্রতা অর্জন করেন তাদেরকেও তিনি ভালোবাসেন বলে কোরআনে পাকে ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা প্রার্থনাকারী এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকে ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
পবিত্রতা অর্জনের ছোট্ট আমলটি হলো- আল্লাহকে স্মরণ করে ‘অজু’ করা। আমলটি ছোট হলেও এর মর্যাদা অনেক বেশি। তবে এ আমলের শুরুতে আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় গুরুত্বসহকারে এসেছে-
১. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার অজু নেই; তার নামাজ নেই। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নাম (অর্থাৎ বিসমিল্লাহ) বলে না; তারা অজু (যথাযথ) হয় না।’ (ইবনে মাজাহ)
যেসব ফরজ ইবাদতে অজু আবশ্যক; সেসব ইবাদত অজু ছাড়া কবুল হয় না। আবার কিছু আমল আছে যা হালাল পন্থায় উপার্জিত অর্থ না হলে তাও কবুল হয় না। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিষয়টি সুস্পষ্ট করেছেন এভাবে-
২. হজরত উসামাহ ইবনু উমায়র আল-হুযালি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পবিত্রতা (অজু) ব্যতিত আল্লাহ তাআলা নামাজ কবুল করেন না আর হারাম (অবৈধ) পথে উপার্জিত মালের (অর্থের) দ্বারা দান-খয়রাতও কবুল করেন না।’ (িইবনে মাজাহ, নাসাঈ, আবু দাউদ)
৩. হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্রতা (অজু) ছাড়া নামাজ কবুল করেন না এবং হারাম পন্থায় উপার্জিত মালের (অর্থের) দান-খয়রাতও কবুল করেন না।’ (মুসলিম, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মুসনাদে আহমাদ)
৪. হজরত আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ পবিত্রতা ছাড়া সালাত কবূল করে না এবং হারাম পন্থায় অর্জিত মালের দান-খয়রাতও কবূল করেন না।’(ইবনে মাজাহ)
৫. হজরত আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ পবিত্রতা ছাড়া নামাজ কবুল করেন না এবং হারাম উপায়ে অর্জিত (অর্থের) মালের দান-খয়রাতও কবুল করেন না।’ (ইবনে মাজাহ)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, অজুর সঙ্গে সম্পৃক্ত ফরজ ইবাদতগুলোর জন্য অজুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা আবশ্যক। তবেই নামাজ আদায় হবে। আর দান-সাদকার সাওয়াবের জন্যও হালাল উপায়ে আয়ের অর্থের বিকল্প নেই। তাই বৈধ পন্থায় উপর্জিত অর্থ থেকে দান-সাদকা করার আবশ্যক।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে অজু করার মাধ্যমে আবশ্যক ইবাদতগুলো পালন করার তাওফিক দান করুন। হালাল উপার্জন দিয়ে হারাম থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যমে দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।