শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৬ অপরাহ্ন

আজ ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা ত্রিশাল ঈশ্বরগঞ্জ ও দাউদকান্দি মুক্ত দিবস

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ২১১ বার পঠিত
আজ ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা ত্রিশাল ঈশ্বরগঞ্জ ও দাউদকান্দি মুক্ত দিবস
ফাইল ফটো
আজ ৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের এই দিনে খুনি পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মুক্ত করেছিলেন নেত্রকোনা, কুমিল্লার দাউদকান্দি, ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও ঈশ্বরগঞ্জকে।
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) : আজ ৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের এদিন খুনি পাকিস্তানিদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল তদানীন্তন বৃহত্তর দাউদকান্দি। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর ফজরের নামাজের পর দাউদকান্দির (বর্তমান মেঘনা ও তিতাস উপজেলাসহ) মুক্তিযোদ্ধারা পালেরবাজার নন্দীবাড়ী, গোয়ালমারী, পাঁচগাছিয়া, মোহাম্মদপুর, চরগোয়ালি, বাতাকান্দি, বড়কান্দা ও রামপুর বাজার ক্যাম্প থেকে কোম্পানি কমান্ডার মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে শহীদনগর ওয়্যারলেস ক্যাম্পে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ শুরু করেন। এ সময় খুনি পাকিস্তানি বাহিনী পিছুহটে দাউদকান্দির সড়ক ও জনপথের ডাকবাংলোতে এসে আশ্রয় নেয়। ৮ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে আক্রমণ শুরু করলে ৯ ডিসেম্বর সকালে খুনি পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসররা ডাকবাংলো থেকে গোমতী নদী দিয়ে লঞ্চযোগে ঢাকায় পালিয়ে যায়। আর এর মধ্য দিয়ে মুক্ত হয় দাউদকান্দির মাটি। উল্লেখ্য, মেঘনা ও তিতাস উপজেলাও তখন দাউদকান্দির অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) : এদিন খুনি পাকিস্তানিদের কবল থেকে মুক্ত হয় ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা। ১৯৭১-এর ৮ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সংঘবদ্ধ হয়ে আক্রমণ চালান থানার ঘাঁটিতে। রাতভর যুদ্ধের পর ৯ ডিসেম্বর ভোররাতেই পাকিস্তানি বাহিনী হটে যায় ত্রিশাল থেকে। এর আগে ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে নির্দেশনা আসে পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ করে ত্রিশাল থানা দখলের। এরপর ১১ নম্বর সেক্টরের এফজে সাব-সেক্টর আফসার বাহিনীর কমান্ডার আইয়ুব আলী, টুআইসি আব্দুল বারী মাস্টার ও ভালুকার মেজর আফসার বাহিনীর নাজিম উদ্দিন কমান্ডারের নেতৃত্বে গভীর রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। জৈমত আলী, গোলাম মোস্তফা, ছাইফুল ইসলাম, আব্দুল আজিজ, মনিরুদ্দিন, ইয়াছিন আলী, চান তারা, জামালউদ্দিন, আব্দুল হাই ও সিরাজুল ইসলামসহ ২০ থেকে ২৫ জন মুক্তিবাহিনীর কাছে পরাজিত হয় খুনি পাকিস্তানিরা।
৯ ডিসেম্বর সকালে স্থানীয় সরকারি নজরুল একাডেমি স্কুল মাঠে তৎকালীন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জৈমত আলী মাস্টারের উপস্থিতিতে আব্দুল বারী মাস্টার স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে ত্রিশালকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন।
নেত্রকোনা : এদিন নেত্রকোনা শহরকে খুনি পাকিস্তানিদের কবল থেকে মুক্ত করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের চতুর্মুখী আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পথে মোক্তারপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন কৃষি ফার্মের কোনায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের মরণপণ লড়াই হয়। এই লড়াইয়ে শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক আহমেদ ওরফে সাত্তার, আব্দুল জব্বার ওরফে আবু খাঁ ও আব্দুর রশিদ।
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর কাজী আলম কোম্পানির প্লাটুন কমান্ডার হাবিবুর রহমান হলুদ, আলতাব কোম্পানির প্লাটুন কমান্ডার কাজী হাসানুজ্জামান হীরু ও হাবিবুল্লাহ খান কোম্পানির প্লাটুন কমান্ডার মতিউর রহমানের নেতৃত্বে আক্রমণ চালানো হয়। তিনটি কমান্ডের প্রায় ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা মাইজগাঁ রেলব্রিজ ও টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করেন। এই যুদ্ধে ৭ বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, সামছু, আনোয়ার, মান্নান, তাহের, আ. খালেক ও হাতেম আলী শহীদ হন।
এই আক্রমণ ব্যর্থ হওয়ার পর নতুন উদ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা ৮ ডিসেম্বর রাতে আক্রমণ চালান। মুক্তিযোদ্ধাদের থানা আক্রমণের ভয়াবহতায় ভীত হয়ে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসররা থানা থেকে পালিয়ে যায়।
ওই যুদ্ধ সম্পর্কে যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান হলুদ বলেন, আমরা ৩ কোম্পানির ৩ প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা ঈশ্বরগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করার অঙ্গীকারের ফলে ঈশ্বরগঞ্জ শত্রুমুক্ত হয়। আর এখন এ ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানাতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com