বিডি ঢাকা স্টাফ রিপোর্টার: গত ১৩-০২-২০২২ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.৩০ টার সময় রাজশাহীর সম্মানিত পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন, বিপিএম(বার) মহোদয় এর দিকনির্দেশনায় ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ রুহুল আমিনসহ একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাঘা থানাধীন আড়ানী চকরপাড়া এলাকায় একটি ভেজাল খেজুরের গুড় তৈরির কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৫০ মণ ভেজাল খেজুরের গুড়, ভেজাল গুড় তৈরির বিভিন্ন উপকরণ সামগ্রী জব্দ করাসহ কারখানার মালিকসহ ০৭ জন ব্যক্তিকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তিরা হচ্ছেন, কারখানার মালিক ১। মোঃ রকিব আলী (৪২), পিতা-মৃত আবুল হোসেন ও তার সহযোগী ২।
মোঃ সুমন আলী (৪২), পিতা-মোঃ আকবর আলী, ৩। মোঃ অনিক আলী @ পাইলট (৩০), পিতা-মৃত মাজদার রহমান, ৪। মোঃ মাসুদ রানা (৩০), পিতা-মোঃ মোসলেম, ৫। মোঃ বিপ্লব হোসেন @ সাজু (২৫), পিতা-মোঃ আঃ হান্নান, ৬। মোঃ মামুন আলী (২৭), পিতা-মোঃ ওহাব আলী ও ৭। মোঃ বাবু (২৫), পিতা-মোঃ ওহাব আলী, সর্ব সাং-আড়ানী চকরপাড়া, থানা-বাঘা, জেলা-রাজশাহী। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিগণ জানান তারা পরস্পর যোগসাজসে বিগত কয়েক মাস যাবৎ উক্ত কারখানায় চিনি, চুন, হাইড্রোজ, ফিটকেরি, ডালডা ও বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান মিশিয়ে ভেজাল খেজুরের গুড় তৈরি করে আসছে। তারা এগুলো রাজধানী ঢাকা’সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে থাকে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায় যে, আখের মওসুমেও তারা ভেজাল আখের গুড় তৈরি করে থাকে। কিন্তু খেজুরের গুড় ও আখের গুড় তৈরির ক্ষেত্রে তারা খেজুরের রস ও আখের রস ব্যবহার করে না। গুড় তৈরির ক্ষেত্রে তারা যে সকল রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে সেগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ও জটিল রোগের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় বাঘা থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-সি(১)(এ)/২৫-ডি ধারা মামলা রুজু হয়েছে যার মামলা নং-১২ তারিখ ১৩-০২-২০২২ । আটককৃত ব্যক্তিদের সাথে আর কারা জড়িত আছে সে বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। রাজশাহী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ভেজাল বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জব্দকৃত আলামতের বিবরণ ঃ
১। গুড় ভর্তি ৫৮টি ক্যারেট। প্রতিটি ক্যারেটের গুড় সহ ওজন ৩৫ কেজি করে সর্বমোট (৫৮ x ৩৫)=২,০৩০ কেজি। মূল্য অনুমান (২,০৩০ x ১২০)=২,৪৩,৬০০/- টাকা।
২। ১০ বস্তা চিনি। প্রতিটি বস্তা সাদা প্লাষ্টিকের তৈরি, যার গায়ে দেশবন্ধু চিনি সহ অন্যান্য লেখা আছে। যার ওজন (৫০ x ১০)=৫০০ কেজি। মূল্য অনুমান (৫০০ x ৭৫)=৩৭,৫০০/- টাকা।
৩।একটি সাদা প্লাষ্টিকের তৈরি বস্তার মধ্যে রক্ষিত ফিটকিরি।যার ওজন ১৮কেজি। মূল্য অনুমান (১৮ x ৩০)=৫৪০/-টাকা।
৪। একটি সাদা প্লাষ্টিকের বস্তার মধ্যে রক্ষিত চুন। যার ওজন ২৫ কেজি। মূল্য অনুমান (২৫ x ৩৫)=৮৭৫/- টাকা।
৫। একটি সাদা পলিথিনের মধ্যে রক্ষিত ডালডা। ওজন ৬০০ গ্রাম। মূল্য অনুমান ১৫০/- টাকা।
৬। একটি সাদা পলিথিনের মধ্যে রক্ষিত হাইড্রোজ। ওজন ০১ কেজি। মূল্য অনুমান ৩০০/- টাকা।
৭। প্লেনসীটের তৈরি গুড় বানানোর তাওয়া ০২টি। মূল্য অনুমান (৫,০০০ x ২)=১০,০০০/- টাকা।
৮। একটি মাটির চাড়ি। মূল্য অনুমান ২০০/-টাকা।
৯। কাঠের তৈরি গুড় নাড়ার পাঠ ০২টি। মূল্য অনুমান ৫০০/- টাকা।
১০। ডিজিটাল ওয়েট মেশিন ০১টি। মূল্য অনুমান ৫,০০০/- টাকা।
১১। মাটির তৈরি শরা/বাটি ৭০০টি। মূল্য অনুমান (৭০০ x ১০)=৭,০০০/- টাকা।
উদ্ধারকৃত মালামালের সর্বমোট মূল্য ৩,০৫,৬৬৫/- টাকা।