বিডি ঢাকা স্টাফ রিপোর্টার: মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সারা বিশ্ব স্থবির হয়ে পরেছে। যার ফলে দেশের হাজার হাজার যুবক বেকার হয়ে পরেছে। তারই মধ্যে থেকে জীবন যুদ্ধে লড়াই করে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বেকার হয়ে পরা যুবক শুভ এখন মাশরুম চাষে সফলতা লাভ করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে ফেলেছে। তার মাশরুম চাষের সাফল্য এখন এলাকার অন্যান্য তরুণ ও বেকার যুবকদের কাছে অনুকরনীয় দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন ওই খামার থেকে ১৫-২০ কেজি মাশরুম বিক্রি করে প্রতি মাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা আয় করে তার পরিবারে স্বচ্ছলতা এনেছে।
উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ গ্রামের সফল মাশরুম খামারি সৌমিত্র মজুমদার জানান, এলএল.বি পাস করে ঢাকায় একজন আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করি কিন্তু করোনার প্রভাবে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ২০২০ সালে জার্মান প্রবাসী এক বোনের পরামর্শে সাভারের শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ট্রেনিং সেন্টারে তিন মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর কলাপাড়ায় এসে দেড় লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে প্রথমে ৫০ টি মাশরুম স্পন দিয়ে চাষ শুরু করি।
বর্তমানে ২০ শতাংশ জমির উপর দু’টি গোলপাতা ও বাশেঁর তৈরী সেডে পায়রা মাশরুম সেন্টারটি গড়ে তোলেন তিনি। ক্রেতারা সরাসরি এবং চধুৎধ গঁংযৎড়ড়স ঈবহঃৎব নামের ফেসবুক পেইজ এর মাধ্যমে প্রতি কেজি মাশরুম ৩ শত টাকা দরে ক্রয় করছেন, এছাড়া শুকনো মাশরুম দু’ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
প্লাষ্টিক ব্যাগের ভেতর পরিমিত পরিমানে ভেজা খড়-কুটো আর সামান্য চুনের মিশ্রনের মধ্যে মাশরুম চাষ করা হয়। অন্যান্য উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয় কাঠের গুড়ো, গমের ভ‚ষি ও তুষ। তিন বেলা পরিমিত পরিমাণে পানি ছিটানো ছাড়া তেমন কোন পরিচর্যা করতে হয় না। ব্যবহার করতে হয় না কোন ধরণের রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। ছায়াযুক্ত ঠান্ডা ভেজা ভেজা স্থান মাশরুম চাষের জন্য ভাল। সঠিক রক্ষণাবেক্ষনে মাত্র ২০ দিনে শুরু হয় ফলন দেওয়া। প্রতিদিন শুভ তার খামার থেকে ১৫ থেকে ২০ কেজি মাশরুম বিক্রি করেন। সরকারী সহায়তা বা স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা পেলে সে তার খামারটিকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, মাশরুম চাষী শুভকে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া মাশরুম চাষে আগ্রহী যুবকদের সকল ধরণের সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত¡ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো জাহিদ হাসান জানান, মাশরুম খাদ্য ও পথ্য হিসেবে সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ঔষধি গুন সম্পন্ন। তাই দেশে বিদেশে মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাণিজ্যিক ভাবে বাংলাদেশ থেকে মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।