অনলাইন নিউজ : করোনার কারণে দুই বছর পর রমজান শেষে মুসলমানদের দুয়ারে সেই চিরচেনা রূপে ফিরেছে ঈদুল ফিতর। নামাজ শেষে কোলাকুলি আর পরষ্পরের মাঝে সৌহার্দ বিনিময়ে ফিরেছে প্রফুল্লতা।
এ দিকে কোলাকুলিতে সম্প্রীতির সেতুবন্ধনে মিলে গেলো মুসল্লীরা। জাতীয় ঈদগাহসহ জেলা উপজেলার গ্রামের পাড়া-মহল্লা নামাজিদের ছোটো-বড়, যুবক-বৃদ্ধ সববয়সী মানুষদের এক কাতারে দাড় করিয়েছে।
এই দুই বছরে করোনার বিধিনিষেধের কারণে যেনো ভাটা পড়েছিলো ঈদের আনন্দ। ছেদ পড়েছিলো প্রাণ খুলে আনন্দ উৎসবের। এবার আর এসবের ছায়া আসেনি। তাই প্রকৃতির মতো প্রাণ খুলে আনন্দে মেতেছে সবাই। ঈদ উৎসবের আমোদে রঙিন ছিলো সবকিছু।
জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করেছেন রহিম ইসলাম। এসেছেন রায়ের বাগ থেকে। তার সঙ্গে আট বছরের ছেলে সিফাত। রহিম ইসলাম বলেন, চার বছর বয়স থেকেই ছেলেকে ঈদগাহে নিয়ে আসেন তিনি।
একই রকম পাঞ্জাবি-টুপি পড়ে মীরপুর থেকে ঈদ জামাতে এসেছে শরিফুল, মেহেদী, সাকিব ও তুষার। নামাজ শেষে চার বন্ধু কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ উদযাপন করেন।
শরিফুল বলেন, ইসলামে ধনী-গরিব আর ছোটো-বড়, এসবের কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই সমান। এর প্রমাণ ঈদুল ফিতর। সিয়াম সাধনার পর সবাই মিলিত হয় ঈদগাহে।
পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার থেকে নামাজ পড়তে আসা মিল্টন আনোয়ার বলেন, এখন তো আর ছেলেবেলার সেই কোলাকুলির দৃশ্য দেখা যায় না। এখন তো ঈদের কোলাকুলির দৃশ্য টিভি ও খবরের কাগজে দেখা যায়।
গেলো দুই বছর মহামারির সময়টাতে খোলামাঠে অনুষ্ঠিত হয়নি ঈদের জামাত। এভাবেই কেটে গেছে চারটি ঈদ।এবার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তাইতো প্রায় লাখো মানুষের মিলনে মুখোরিত হলো জাতীয় ঈদগাহ মাঠ। ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে আশপাশের সড়কে ডাইভারশন দেয় পুলিশ। মুসল্লিদের কিছুটা পথ হেঁটে মাঠে আসতে হয়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
নামাজ আদায়ের জন্য সকাল ৭টা থেকে থেকে জায়নামাজ হাতে ঈদগাহে ভিড় করেন মুসল্লিরা। তাদের অনেকের হাতে ছাতাও দেখা যায়। ঈদের নামাজ আদায় করতে সন্তানের কাধে ভর করে যেমন প্রবীন পিতা এসেছেন আবার পিতার কোলে চড়ে এসেছেন ছোট্ট সন্তানও। এমনকি নারীদের উপস্থিতিও দেখা গেছে।
জাতীয় ঈদগাহ মাঠে কাধেঁ কাধঁ মিলিয়ে এভাবে নামাজ আদায় করেন প্রায় লাখো মানুষ।
এদিন সকাল সাড়ে ৮টার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে হাজার হাজার মুসল্লি প্রধান ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধ কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া শেষে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন মুসল্লিরা।
জামায়াতে অংশ নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মন্ত্রী পরিষদ সদস্যরা, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিচারপতি, কুটনৈতিকসহ সাধারণ মানুষ।
নামাজের ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের প্রধান খতিব মাওলানা রুহুল আমীন। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মানুষের কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়।