সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে সব পক্ষেরই সচেতনতা দরকার : আলোচনা সভায় অভিমত ক্ষতিপূরণ দাবি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ ৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল ঢাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পল্লী বিদ্যুতের ৭ জন বরখাস্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের কর্মসূচি স্থগিত ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজে হামলা- ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত বরাদ্দের মধ্যেই দিবস পালন করতে হবে : জেলা প্রশাসক চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় আবদুল ওয়াহেদ নেতৃত্বাধীন প্যানেলের

রাজধানীর আশপাশের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ডেমরা-ডগাইর বাজারের অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২২ জুন, ২০২২
  • ১২৩ বার পঠিত
অনলাইন নিউজ : রাজধানীর আশপাশের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ডেমরা-ডগাইর বাজারের অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এ ছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ, মাতুয়াইল ও মুগদার মাদিনাবাগসহ রাজধানীর নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়ি ও সড়কে পানি ছুঁই ছুঁই। হু-হু করে বাড়ছে ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর পানি। নদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধির কারণে ঢাকার চারপাশে বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মুগদার মদিনাবাগে ছোট খালটি সোমবার রাতে পানিতে ভরে গেছে।
খালের পাশেই থাকেন জাকির হোসেন নামে এক ভ্যানচালক। তিনি জানান, খালের পানি যেভাবে বাড়ছে দুয়েকদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে সড়কটিও তলিয়ে যাবে। এ এলাকায় শতাধিক পরিবার  বসবাস করে বলে জানান তিনি।
রাজারবাগের কালীবাড়ি এলাকার মিলন জানান, তার বাসার কাছে পানি চলে এসেছে। স্থানীয় একটি রিকশার গ্যারেজে পানি ছুঁই ছুঁই করছে। যাত্রাবাড়ীর সাইনবোর্ড থেকে ডেমরার ডগাইর বাজার রোডের দুপাশের অনেক বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। পানি প্রবেশ করায় ঘরের মধ্যে ইট বিছিয়ে হাঁটাচলা করছে অনেকেই। রান্নবান্নাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ করতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
একই অবস্থা রাজধানীর পূর্বাঞ্চলের অনেক এলাকার। এরই মধ্যে এসব এলাকার খাল-বিল ও জলাশয়গুলো মৌসুমি বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে পূর্ণ হয়ে গেছে। অনেক এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নতুন সংযুক্ত ৬২, ৬৫, ৬৯ ও ৭০ নম্বর ওয়ার্ডসহ বেশকিছু এলাকা বন্যাঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বেড়াইদ, বনশ্রী, আফতাবনগরসহ বেশকিছু এলাকায় পানি ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। প্রতিবছরই বৃষ্টির পানি ঢুকলে প্লাবিত হয় ডিএসসিসির ৭০নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা। তবে এবার এখনও এই এলাকায় পানি ঢোকেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর হাজী আতিকুর রহমান।
বাড়ছে ঢাকার চারপাশের নদীর পানি : বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ বলছে, ঢাকার চারপাশের নদ-নদীগুলোর মধ্যে তুরাগ, বালু, ধলেশ্বরী, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যার পানি বাড়ছে। বালু নদীর পানি ৫ দশমিক ৭৫ মিটারের ওপরে গেলে বিপদসীমা ধরা হয়। শনিবার এই নদীর পানি ছিল ৩ দশমিক ৩৫ মিটার, যা বেড়ে সোমবার ৩ দশমিক ৫৭ মিটার এবং মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ৩ দশমিক ৭০ মিটারে দাঁড়িয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী রোববার এই নদীর পানি ৪ দশমিক ২৬ মিটারে উঠতে পারে।
ঢাকার মিরপুর অংশে তুরাগের বিদদসীমা ৫ দশমিক ৯৪ মিটার। শনিবার পানি ছিল ২ দশমিক ৪৬ মিটার। সোমবার সকাল ৬টায় ছিল ৩ দশমিক ৮৫ এবং মঙ্গলবার সকালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৯২ মিটার। পানির এ উচ্চতা আগামী রোববার ৪ দশমিক ২ মিটার হতে পারে।
শীতলক্ষ্যার বিপদসীমা ৫ দশমিক ৮০ মিটার। শনিবার এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৩ দশমিক ৭৫ মিটার। মঙ্গলবার সকালে দাঁড়ায় ৪ দশমিক ২৭ মিটার।
বুড়িগঙ্গার বিপদসীমা ৬ মিটার। শনিবার এই নদীর পানি ছিল ৩ দশমিক ৩০ মিটার। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ছিল ৩ দশমিক ৪২ মিটার। আগামী রোববার ৩ দশমিক ৭৬ মিটারে উঠতে পারে। ধলেশ^রীর বিপদসীমা ৫ দশমিক ২০ মিটার। শনিবার এই নদীতে ছিল ৩ দশমিক ১৩ মিটার, যা মঙ্গলবার বেড়ে ৩ দশমিক ২৪ মিটার হয়েছে। রোববার বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৪ দশমিক ৫৩ মিটার।
এ ছাড়া তুরাগ নদের কালিকৈর অংশের বিপদসীমা ৮ দশমিক ৪০ মিটার। গত সোমবার সকালে ৬ দশমিক ৭৪ এবং মঙ্গলবার ৬ দশমিক ৭৮ মিটার ছিল। আগামী রোববার নাগাদ যা ৭ দশমিক ৩৩ মিটারে দাঁড়াতে পারে বলে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এদিকে ঢাকার বেশিরভাগ এলাকার পয়ঃনিষ্কাশন লাইন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যায়। কিছু অংশের নিষ্কাশন নালা হাতিরঝিলসহ বিভিন্ন লেকের মধ্যে পড়েছে। ফলে ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে গেলে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার পানি নিষ্কাশন বাধার মুখে পড়বে। ফলে নিম্নাঞ্চলের পাশাপাশি ঢাকার অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞমত : বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক একেএম সাইফুল ইসলাম মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকার চারদিকে থাকা ছয়টি নদীর পানি এখনও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের পর বন্যা দেশের মধ্যাঞ্চলে আসছে। এরই মধ্যে যুমনা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেক্ষেত্রে ঢাকায় বন্যার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই সংশ্লিষ্টদের প্রস্তুতি নেওয়ার আহŸান জানান তিনি।
যা বলছে কর্তৃপক্ষ : এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, অতিমাত্রায় উঁচু অঞ্চল থেকে পানি প্রবাহিত এবং অনেক বেশি বৃষ্টি হলে ঢাকার নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। বন্যা কোন পর্যায়ে যেতে পারে, তার কোনো পূর্বাভাস কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের দেয়নি।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছে, এখনও ঢাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করার কোনো খবর তারা পাননি। নিম্নাঞ্চলসহ কোনো এলাকায় পানি জমা হলে তা নিষ্কাশনের প্রস্তুতি সিটি করপোরেশনের রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com