অনলাইন নিউজ : স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য জলে নৌপুলিশ-কোস্টগার্ড, স্থলে কমান্ডো বাহিনী, আকাশ পথে হেলিকপ্টারের টহল দেয়ার মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে ত্রিমাত্রিক স্তরের নিরাপত্তাবলয়। পুলিশ, আনসার, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবি, সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যসহ মোতায়েন করা হয়েছে আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে পাঁচ হাজার সদস্য। মূল সেতুর নিরাপত্তা দেবে সেনাবাহিনী। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) চোখে পদ্মা সেতুর সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ যাতে গুজব ছড়াতে না পারে, সে জন্য সার্বক্ষণিক সাইবার মনিটারিং করা হচ্ছে। স্যুইপিং, ডগস্কোয়াড, বোম ডিজপোজেল টিম, জলকামান, এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসসহ সব ধরনের আয়োজনে নিরাপত্তার যে জাল ফেলা হয়েছে, তাতে অনেকটাই রণপ্রস্তুতি। নাশকতা, গুজব ছড়ানোর আশঙ্কার কথা বিবেচনা করেই সন্ত্রাসী, জঙ্গী, দুর্বৃত্ত চক্রের জানমাল ধ্বংসের তৎপরতা দেখলেই প্রয়োজনবোধে গুলি করার হুকুম দেয়া আছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতুর উদ্বোধীন অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, এমপি, বিশিষ্ট রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, কূটনীতিক, দেশী-বিদেশী অতিথিসহ ভিআইপিদের থাকবে ব্যাপক উপস্থিতি। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার জাল তৈরি করার মধ্যেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের যাতে হয়রানি, দুর্ভোগের শিকারে পরিণত হতে না হয়, সে জন্য ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিকে জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসবমুখর করে তোলার জন্য নজিরবিহীন কঠোর নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার জাল তৈরি করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে।পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রতিটি থানায়। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ঘিরে যে কোন ধরনের নাশকতা, গুজব অপপ্রচারের চেষ্টা ঠেকাতে আমাদের সাইবার পুলিশ, সিটিটিসি, এ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা সক্রিয় মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। একটি মহল নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কিছু ঘটিয়ে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে। সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় শুধু পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরেই নয়, নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে রাজধানীসহ সারাদেশেই। পদ্মার দুই পাড়ে র্যাবসহ পুলিশের সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি সদস্য ইউনিফর্মে মোতায়েন থাকবেন। এর বাইরে বিভিন্ন বাহিনীর গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা সাদা পোশাকে তৎপর থাকবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পদ্মা সেতু তৈরিতে যারা এর বিরোধিতা করেছিল, তারা দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার করছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে ১৩ বছরেরও বেশি সময়। এই সময়ে দেখা গেছে যখনই কোন উন্নয়ন, অগ্রগতি ও ভাল কিছু করতে গেছে এই সরকার, তখনই কোন না কোনভাবে সেটাকে ভেস্তে দেয়ার জন্য একটি মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেছে। যেমন পদ্মা সেতু তৈরি শুরু হওয়ার আগেই দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের ফলে পদ্মা সেতু তৈরিই হুমকির মুখে পড়ে যায়। পদ্মার সেতু দেশের মানুষের একটি গৌরবের বিষয়। দেশের মানুষের স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে ভেঙ্গে দিতে বিভিন্ন সময় দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্নকে পূরণ করে দেখিয়েছেন। যখন ষড়যন্ত্র করেও পদ্মা সেতু তৈরি আটকানো যায়নি, তখন সেটির উদ্বোধনকে কিভাবে ভেস্তে দেয়া যায়, তার একটি পরিকল্পনা চালাচ্ছে সেই অশুভ মহল। ষড়যন্ত্র ও দুর্নীতির অভিযোগকে মিথ্যা প্রমাণিত করে নিজ অর্থেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করছে বাংলাদেশ, আর পদ্মা সেতু নির্মাণের স্বপ্নের বাস্তবায়নের সফল নায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।