সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে সব পক্ষেরই সচেতনতা দরকার : আলোচনা সভায় অভিমত ক্ষতিপূরণ দাবি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ ৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল ঢাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পল্লী বিদ্যুতের ৭ জন বরখাস্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের কর্মসূচি স্থগিত ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজে হামলা- ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত বরাদ্দের মধ্যেই দিবস পালন করতে হবে : জেলা প্রশাসক চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় আবদুল ওয়াহেদ নেতৃত্বাধীন প্যানেলের

দেশে ক্রমাগতভাবে আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনা- মাস্কসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কঠোর হচ্ছে সরকার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০২২
  • ১১৯ বার পঠিত
দেশে ক্রমাগতভাবে আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনা- মাস্কসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কঠোর হচ্ছে সরকার
ফাইল ফটো
অনলাইন নিউজ : দেশে ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। একই সঙ্গে বাড়ছে রোগী শনাক্তের হারও। গত এপ্রিল ও মে মাসজুড়ে যেখানে করোনা সংক্রমণ গড়ে প্রতিদিন ৫০ জনের নিচে ছিল। সেখানে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে শুরু করে। গত তিন দিন ধরে ২ হাজারের বেশি করে শনাক্ত হচ্ছেন। আর চলতি মাসের শুরুতে শনাক্তের হার ১ শতাংশের নিচে থাকলেও এখন দাঁড়িয়েছে ১৫ শতাংশের ওপর। এ পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে। করোনার নতুন ধরনের কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও বাড়ছে। তবে সংক্রমণ অনেকটাই মৃদু হলেও এখনও মৃত্যুঝুঁকি রয়ে গেছে। তাই করোনাকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে। তাই মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন তারা। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা সফল হয়েছিলাম কিন্তু আবারও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। আমরা আতঙ্কিত না হলেও চিন্তিত।
এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মাস্ক পরিধানসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে ৬ নির্দেশনা দিয়েছে। আর মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের ৯টি নির্দেশনা মানতে জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া দেশে হঠাৎ করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবাইকে মাস্ক পরার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, দেশে এক সপ্তাহের ব্যবধানে করোনা শনাক্ত ২৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়েছে। আর মৃত্যু বেড়েছে ৯০০ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, বুধবার করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ২৪১ জনের দেহে। আগের দিন মঙ্গলবার শনাক্ত হয়েছিল ২ হাজার ৮৭ জন রোগী। সোমবার এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১০১ জন। আর সবশেষ ১৮ ফেব্রুয়ারি বুধবারের চেয়ে বেশি, ২ হাজার ৫৮৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল এক দিনে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। আগের দিন মৃত্যু হয়েছিল ৩ জনের। এ ছাড়া শনাক্তের হার কিছুটা কমে ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের ছিল ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, দেশে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৯ লাখ ৭১ হাজার ৬০২ জনের দেহে এবং তাদের মধ্যে মারা গেছেন ২৯ হাজার ১৪৫ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৫২ জন। আর দেশে এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৭ হাজার ২১৯ জন। দেশে এখন পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মোট শনাক্তকৃত রোগীর মধ্যে ১ হাজার ৮১৪ জনই ঢাকা মহানগর ও জেলার বাসিন্দা। দেশের ৪৮ জেলায় এদিন নতুন রোগী পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৬৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের ২৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৪৫ জন, রাজশাহী বিভাগের ৩১ জন, খুলনা বিভাগের ৩৭ জন, সিলেট বিভাগের ৯ জন, বরিশাল বিভাগের ২৪ জন এবং রংপুর বিভাগে আক্রান্ত হয়েছেন ২ জন।
দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপট কমলে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে এসেছিল। ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে এক পর্যায়ে ২৬ মার্চ তা একশর নিচে নেমে আসে। আর ১১ সপ্তাহ পর গত ১২ জুন দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা একশ ছাড়িয়ে যায়। আর ১৫ দিনের মাথায় ২৭ জুন তা আবার ২ হাজারের ঘর ছাড়ায়। আর বেশ কিছু দিন শনাক্তের হার ১ শতাংশের নিচে ছিল। কিন্তু গত ২২ মের পর থেকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী কোনো দেশে সংক্রমণ দুই সপ্তাহের বেশি ৫ শতাংশের নিচে থাকলেই করোনা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে গণ্য করা হয়। সেই হিসাবে করোনা সংক্রমণের উচ্চঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দেশ।
এ ব্যাপারে দেশের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ সময়ের আলোকে বলেন, আমাদের পাশর্^বর্তী দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা নতুন করে বাড়ছে। আর ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট ইঅ.৪/৫ খুব দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে ছড়ায় এবং আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায় ১০ জনকে সংক্রমিত করতে পারে। তবে সংক্রমণের হারে বৃদ্ধি পেলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
দেশে করোনা বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চায় না। ঠিকমতো মাস্ক পরে না, হাত ধোয় না। যেসব জায়গায় করোনার প্রাদুর্ভাব বেশি- সেসব স্থানে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আর এখনও যারা টিকা নেয়নি তাদের দ্রুত টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর সময়ের বলেন, দেশে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে এটি চতুর্থ ঢেউয়ের ইঙ্গিত। আর গ্লোবালাইজেশনের কারণে সংক্রমণ সারা পৃথিবীতেই বাড়ছে। প্রচুর মানুষ দেশে বিদেশ ট্রাভেল করছে। আমাদের দেশ যেমন প্রচুর মানুষ বাইরে যাচ্ছে আবার আসছে। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হয় না। ফলে কে করোনা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তা আমরা জানি না। ফলে আরও বেড়ে যেতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com