বরিশাল সংবাদদাতা : প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে এবার কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই রাজধানী ঢাকায় ফিরতে বরিশালের লঞ্চ ও বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে মানুষের ভিড়। তাদের মধ্যে কেউ যাচ্ছেন লঞ্চে আবার কেউ যাচ্ছেন বাসে। তবে চিরচেনা লঞ্চ ঘাটের চিত্র এখন আর নেই। লঞ্চের পাশাপাশি যাত্রীরা বাসে করে ঢাকা যাচ্ছেন। তাই বিগত বছরগুলোর থেকে এবার সড়ক পথে যাত্রীদের চাপ অনেকটাই বেশি।
এদিকে ঈদের আগেই ঈদের পরের ঢাকামুখী বাসের বেশিরভাগ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। অপরদিকে বিগত বছরগুলোর মতো এবার বরিশাল থেকে ঢাকামুখী লঞ্চের কেবিনের জন্য যাত্রীদের তেমন একটা চাপ না থাকলেও আগামী বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) থেকে শনিবার কিছুটা যাত্রী চাপ হবে বলে মনে করছেন নৌ-যান সংশ্লিষ্টরা।
তবে যাত্রীরা অভিযোগ করছে লঞ্চের মত বাসগুলোর টিকিট দালালদের হাতে চলে গেছে। তাই তারা বাস কাউন্টারে গিয়ে টিকিট পাচ্ছেন না।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিকেলে বরিশাল কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীদের উপচে পরা ভিড়। তবে অনেক বাস কাউন্টার ম্যানেজার বলছে টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। আবার এক এক বাসে টিকিদের মূল্য এক এক রকম। এ কারণে যাত্রীরা পরেছেন ভোগান্তিতে।
একাধিক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, টিকিট নেই বলে আমাদের জনানো হচ্ছে। আবার বেশি টাকা দিলে টিকিটের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। তবে টিকিট কার কাছে? মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলে তারা বাড়তি টাকা আদায় করছে।
রহমান সিকদার নামের এক যাত্রী বলেন, ঈদের ছুটিতে আমরা পরিবার নিয়ে বাড়ি এসেছিলাম। এখন আমরা পাঁচজন ঢাকা যাব। অথচ টিকিট পেয়েছি মাত্র দুটি। আর বাকি তিনজন লোক কীভাবে যাবে।
মনোয়ারা বেগম বলেন, দুপুর একটা থেকে বসে আছি টিকিট করার জন্য অনেক পরিবহন বলছে তাদের টিকিট নাই। আবার সরকার যে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে তার চেয়ে বেশি ভাড়া চাচ্ছে কাউন্টারগুলো।
বরিশাল-ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহনের ম্যানেজার আনিসুর রহমান বলেন, ঈদের আগেই আজ থেকে আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত পদ্মা হয়ে ঢাকাগামী বাসগুলোর বেশিরভাগ টিকিট বুকিং হয়ে গেছে। হাতে গোনা কয়েকটি বাসে অল্প কিছু টিকিট খালি আছে।
তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই মানুষ ঢাকামুখী হচ্ছে। হানিফ, গ্রিনলাইন, ঈগল ও ইলিশ পরিবহনের ঈদের পরের বেশিরভাগ ঢাকামুখী বাসের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
বাসচালক ও হেলপাররা বলছেন, পদ্মা সেতুর কারণে বরিশাল থেকে সড়ক পথে ঢাকার যাত্রা সহজ হওয়ায় বাসের যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। সেইসঙ্গে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশাল-ঢাকা রুটে পরিবহনের সংখ্যাও বেড়েছে। এদিকে যারা অগ্রিম টিকিট পাননি তারা তাৎক্ষণিক বাস সার্ভিসে থাকা বিএমএফ ও বিআরটিসি বাসে চেপে ঢাকায় যেতে শুরু করেছেন।
জানা গেছে, বরিশাল-ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহনে কোনো টিকিট না থাকলেও তারা ভাড়া ৪৫০ টাকা নিচ্ছেন বলে জানান ম্যানেজার আনিসুর রহমান। তবে যাত্রীরা বলছে তাদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও গোল্ডেন লাইন পরিবহনে ৫০০, হানিফ পরিবহনে ৫০০, ঈগল পরিবহন ৬০০, সুপার সনি পরিবহন ৪৫০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে। এদিকে যাত্রীদের নির্বিঘ্নে ঢাকা পৌছানোর জন্য নথুল্লাবাদ বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বাসস্ট্যান্ডে মাইকিং করা হচ্ছে। সেখানে চালক ও হেলপারদের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রীচাপ বেড়েছে। বিকেল থেকে ঢাকাগামী মানুষ লঞ্চগুলোতে উঠছেন। বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, আজ বরিশাল নদী বন্দর থেকে ৮টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।
এ জাতীয় আরো খবর..