বিডি ঢাকা স্টাফ রিপোর্টার:
ছাত্রী নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবীতে ২ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালযের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার(২৪ আগষ্ট) বেলা ১১ টা থেকে এ অবরোধ পালিত হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মো. গোলাম কবির।
অবরোধকারী ছাত্র-ছাত্রীরা জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে দশম শ্রেণিতে পড়া অভিযুক্ত শিক্ষকের মেয়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ও একই বিদ্যালয়ের ক্রিয়া শিক্ষককে একসাথে অফিস কক্ষ থেকে স্থানীয়রা আটক করে। পরে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক কে একটি ঘরে এবং ছাত্রীটিকে অপর একটি ঘরে আটকে রেখে প্রধান শিক্ষক কে খবর দেয়া হয় । মাঠে উৎসুক জনতার ভীড় বাড়তে থাকে এবং বিক্ষোভ শুরু করে স্থানয়িদের একটি অংশ।পরিস্থিতি সামাল দিতে ডাকা হয় পুলিশ।
পরে প্রধান শিক্ষকের উপষ্থিতিতে রাতেই গোলাম কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ছাত্রীর চাচা বাদী হয়ে রাতে মামলা দায়েরের পর সে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার সকাল থেকে ক্লাশ বন্ধ রেখে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ছাত্র-ছাত্রীরা জমায়েত হতে থাকে। বেলা ১১ টার দিকে ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকে।এক পর্যায়ে সোনামসজিদ-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়।
এ সময় মহাসড়কের উভয়পাশে ৩ শতাধিক বিভিন্ন যানবহন আটকা পড়ে।২ ঘন্টা চেষ্টার পর অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিযন্ত্রনে আনে।এদিকে চলমান ঘটনা সামাল দিতে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একটি দল ও প্রশাসন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাথে সভার আয়োজন করে। সভায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১ আসনের সাংসদ ডা: সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল, উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রশিদ সহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা এবং আন্দোলনকারী ছাত্র ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।সভা শেষে বিকেল ৫টায় জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রশিদ জানান, শিক্ষার্থীদের আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে চুড়ান্ত বহিষ্কার একটি সময় সাপেক্ষ এবং নিয়মতান্ত্রিক ব্যাপার।
প্রশাসন চুড়ান্ত বহিষ্কারের উদ্যোগ ইতিমধ্যেই গ্রহন করেছে সেসাথে আইনী প্রক্রীয়াও চলমান থাকবে।বিষয়টি বুঝতে পেওে আন্দোলনকারী তাদেও আন্দোলন শেষ কওে নিজ নিজ বাড়ি ফিরেছে।আগামীকাল থেকে বিদ্যালয়ে পুরোদমে ক্লাশ শুরু হবে।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায় ঐ শিক্ষার্থী সহ আরো কয়েকজন ছাত্রীর সাথে এর আগেও এ ধরনের অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের এক আত্নীয় জানান, ঐ ছাত্রী শিক্ষকের কক্ষে স্বেচ্ছায় গিয়ে উল্টো ধ্বষর্ণের অভিযোগ এনেছে।
আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দশম শ্রেণীর এক ছাত্র জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও উপযুক্ত শাস্তি না দেয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
অন্যদিকে বিদ্যালয়টির প্রদান শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত শিক্ষক কে জরুরী সভার মাধ্যমে রাতেই সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।পরবর্তী পদক্ষেপ প্রশাসন নিবে।
আর শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রীর চাচার দায়েরকৃত ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।রাস্তা যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে এবংবর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে আছে।