মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৯ অপরাহ্ন

ভাঙ্গা সংসার জোড়া লাগালেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হুমায়ুন কবীর

বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৩৬ বার পঠিত

বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হুমায়ুন কবীর সাহেবের ভাষ্য:- অবশেষে আমি সফল।সফল হলো দশ মাসের অন্তসত্ত্বা এবং তার গর্ভের সন্তান।আমি পেলাম মানসিক শান্তি, আর তারা পেল স্ত্রীর মর্যাদা এবং পিতৃপরিচয়।বরাবরের মতো সেদিনও আমি এজলাসে উঠলাম বিচার কার্য পরিচালনা করার জন্য। অনেকগুলো মামলার মধ্যে একটি মামলার ডাক পড়লো।

 

মামলাটি যৌতুক আইনের অধীনে। আমি বাদিকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কি সংসার করবেন। বাদী বলল, জি মাননীয় আদালত। আমি আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ব্যক্তিটি কে জিজ্ঞাসা করলাম। আপনি কি সংসার করবেন, বললো না। বিজ্ঞ আইনজীবীদের বক্তব্য শ্রবণ করলাম, নথি পর্যালোচনাঅন্তে দেখা যায় বাদীর সাথে আসামির গত ০৭/ ০৪/ ২০২১ ইং তারিখে বিবাহ হয় এবং ২৯/০৫/২০২১ ইং তারিখে তালাক হয়। মামলা দায়ের করা হয়েছে ২০২২ সনের মার্চ মাসে। বাদিকে জিজ্ঞাসা করলাম তালাকের পরে কেন যৌতুকের মামলা করেছেন। বাদী উত্তরে বললেন, মাননীয় আদালত আমি বর্তমানে দশ মাসের প্রেগন্যান্ট

 

এবং আমার গর্ভের সন্তানের বাবা আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ঐ ব্যক্তি। আমি আসামিকে জিজ্ঞাসা করতেই আসামি বললেন এটা মিথ্যা কথা মাননীয় আদালত। বাদির সাথে আজ থেকে ১৭ মাস আগে আমার তালাক হয়েছে ঐ সন্তান আমার হতে পারে না। আমি উভয় পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবীদের বললাম এজলাস থেকে নেমে আমার খাস কামরায় বসবো। উভয় পক্ষকে নিয়ে আমার খাস কামরায় বসলাম। প্রথমে আসামির বক্তব্য শ্রবণ করলাম। কোন ক্লু বের করতে পারলাম না। তার একই কথা আমি বহু পূর্বেই বাদিকে তালাক দিয়েছি। এরপরে বাদীর বক্তব্য শ্রবণ করলাম।

 

বাদি তার বক্তব্যে বলেন, আসামি অর্থাৎ আমার স্বামী আমাকে ভুল বুঝিয়ে তালাকনামায় স্বাক্ষর নিয়েছে। আমার স্বামী আমাকে বলেছে আমার পরিবার তোমার সঙ্গে বিয়ে মানছে না, তাই এই কাগজ দেখাতে হবে, যে তোমার সঙ্গে আমার তালাক হয়েছে কিন্তু এটা প্রকৃত তালাক না। আমি তার কথায় বিশ্বাস করে তালাকনামায় স্বাক্ষর করেছি। আমি তালাকনামায় স্বাক্ষর করলেও আমরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই সংসার করেছি। আসামি বাদীর সমস্ত কথা অস্বীকার করলেন।এবার বাদী ২২/০২/২০২২ ইংরেজি তারিখের একটি অডিও রেকর্ড শোনালেন। যেখানে একে অপরের রোমান্টিকতা স্পষ্টতো। আরেকটু গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম

 

হলাম। সূরা নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতের কথা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিলাম। সদা সত্য- সাক্ষ্য দেবে। ধৈর্য ধরে দেড় ২ ঘন্টা তাদের জন্য কাটিয়ে দিলাম। এবার আমি আবারো আসামিকে জিজ্ঞাসা করলাম তালাক পরবর্তী আপনি কি আপনার স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন আসামি স্বীকার করে বললেন, জি মাননীয় আদালত বাদী যা বলেছেন সেটাই ঠিক। আমি কষ্ট নিয়ে অনেক কথা বলে ফেলেছি। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লাম। মনে হলো আমি এভারেস্ট জয় করে ফেলেছি। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রখন। ডাকলাম কাজী দিলাম বিয়ে। বিবেকের জাগ্রতায় প্রতিষ্ঠিত হলো ন্যায়বিচার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com