আলিফ হোসেন,তানোর : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌর নির্বাচনে প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্বকে বঞ্চিত করে নতুন ও দুর্বল নেতৃত্ব মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে এক সময় এমপিবিরোধী( নৌকা) অবস্থান নেয়া দুর্বল মাঝির কারণে নৌকাডুবির আশঙ্কায় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের হৃদয়ে হচ্ছে রক্তক্ষরণ, জনমনেও দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া বইছে মুখরুচোক নানা গুন্জন।স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কাঁকন হাট পৌর নির্বাচনে প্রতিষ্ঠিত, কর্মী-জনবান্ধব, অপ্রতিদন্দী ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব আব্দুল মজিদকে বঞ্চিত করে বয়সের ভারে নুজ্জ্য ও বির্তকিত নেতৃত্ব একেএম আতাউর রহমানকে নৌকার মনোনয়ন দেয়ায় তৃণমুলের নেতা এবং কর্মী- সমর্থকদের মাঝে এসব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ অসন্তোষের সুত্রপাত হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, কাঁকনহাট পৌরসভা এক সময় ছিল জামায়াত-বিএনপির আঁতুড়ঘর। স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী তার রাজনৈতিক দুরদর্শীতায় আব্দুল মজিদকে আওয়ামী লীগে নিয়ে এসে জামায়াত-বিএনপির আঁতুড়ঘর তছনছ করে আওয়ামী লীগের বসতঘরে পরিনত করেন যাতে আব্দুল মজিদের বড় ভুমিকা রয়েছে এতে তিনি কাঁকন হাটের রাজনীতি হয়ে উঠে অপ্রতিদন্দী নেতৃত্ব। ফলে কাঁকন হাট পৌরসভা সৃস্টির পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনে তিনি নিরুঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়ে আসছেন এবারেও তার ব্যতিক্রম হবে না। অথচ কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই না করেই এবার তাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে বলে মনে করছে তৃণমুল। তবে দল-নেতা ও নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ও সম্মান জানিয়ে তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। কিন্ত্ত তার অনুগত বিশাল কর্মী বাহিনী তার মনোনয়ন বঞ্চিত কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না, দীর্ঘদিন একটানা মেয়রের দায়িত্ব পালন করায় পৌর এলাকায় মজিদের নিজস্ব একটা বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে, মজিদ বিরোধীদের যারা কখানোই মেনে নিবেন না এমনকি অনেক স্থানে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং দাবি করেছে সিদ্ধান্ত পুর্ণবিবেচনার বলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা রয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, একেএম আতাউর রহমান স্থানীয় সাংসদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অনেক বির্তকিত হয়েছে এবং দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দলীয় এমনকি জাতীয় কোনো কর্মসুচিতে অংশগ্রহণ না করে অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা অনেক আগেই তাকে ত্যাগ করে,সিনিয়র নেতাকর্মীরাও মুখ পিরিয়ে নেয়, এতে আওয়ামী লীগে তাঁর টিকে থাকায় অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্ত্ত অজ্ঞাত কারণে তাকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়, এতে তৃণমুল বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌর আওয়ামী লীগের এক জৈষ্ঠ নেতা বলেন,জাতীয় সংসদ, জেলা পরিষদ, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সেভেনস্টার গ্রুপের নেতা আতাউর রহমানের ভুমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ, এমনকি বয়সের ভারে নুজ্য এছাড়াও এমপিবিরোধী বলয়ের নামে দলীয় কোন্দল সৃস্টির অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, মাত্র কিছুদিন আগেও আতাউর রহমান পৌরসভার নাগরিক হয়েছেন অনেকে এখানো তাকে বহিরাগত মনে করে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে এখানো তার তেমন কোনো সম্পর্ক গড়ে উঠেনি, যেই সম্পর্ক রয়েছে মজিদের, আবার স্থানীয় সাংসদের সঙ্গেও তার সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে তিনি সভা-সমাবেশে প্রকাশ্যে এমপি ও তার পরিবার নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন। এখন প্রশ্ন হলো কদিন আগেও যিনি এমপির বিরুদ্ধে বিষোদাগার করেছেন, এমপি নির্ভর রাজনীতিতে সেই এমপির নির্বাচনী এলাকায় তিনি কি এমপির সমর্থন ছাড়া বিজয়ী হতে পারবেন না কি সেটা সম্ভব, যদি সেটাই হয় তাহলে এখন তিনি কি মুখে এমপির সহযোগীতা চাইবেন, আবার এমপি তার দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে সেটা মেনে নিলেও এমপির বিশাল কর্মী বাহিনী সেটা কি ভাল ভাবে গ্রহণ করবেন কখানোই করবেন না। কারণ তিনি নিজেই তো কদিন আগে এমপিকে আওয়ামী লীগবিরোধী আঙ্খ্যা দিয়ে তাকে প্রতিহত ও তার বিরুদ্ধে ভোট চেয়েছেন, তাহলে এখন মানুষ কাকে খারাপ বলবে, আবার দল,নেতা ও নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য ও বাধ্যবাধকতার জন্য এমপি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না, তবে তার অনুগত সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা কি সেটা মানবেন কারণ তাদের তো কোনো বাধ্যবাধকতা বা জবাবদিহিতা নাই ইত্যাদি হাজারো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পৌরবাসীর মনে। স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত এসব বিবেচনায় আতাউর রহমান নৌকার প্রার্থী হলেও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নাই। এদিকে হেভিওয়েট মজিদের পরিবর্তে আতাউরকে অনেকে দুর্বল প্রার্থী ভাবছে, আর দুর্বল প্রার্থীর কারণে কাঁকন হাট পৌর নির্বাচনে নৌকা ডুবির আশঙ্কা করছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে এব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও আওয়ামী লীগের দদায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।