বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৩ অপরাহ্ন

সরকারি দপ্তরগুলো দালালমুক্ত রাখার আহ্বান দুদক কমিশনারের : গণশুনানিতে সেবাগ্রহীতাদের মুখোমুখি ২৫ দপ্তর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩
  • ১০৫ বার পঠিত

বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক

 

 

 

রুখব দুর্নীতি, গড়ব দেশ-হবে সোনার বাংলাদেশ’- এই স্লোগানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত ও হয়রানির শিকার নাগরিকদের সরাসরি অভিযোগ শুনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। মঙ্গলবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে নির্বাচন অফিস, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস, জেলা প্রশাসন, ভূমি প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, নেসকো, ব্যাংকসহ ২৫টি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের শুনানি করা হয়। অভিযোগকারীদের অভিযোগের জবাব দেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁনের সঞ্চালনায় ও সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক। এসময় তিনি সরকারি দপ্তর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলেন, আপনার অফিসে আপনি ঘুষ খান না, তাহলে কে খায়, তাকে খুঁজে বের করুন। কারণ এতে আপনার ইমেজ নষ্ট হচ্ছে, সরকারের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। অফিসগুলো দালালমুক্ত রাখুন। আপনাদের ইমেজ বৃদ্ধি করুন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) মো. আক্তার হোসেন; রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. কামরুল আহসান; চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক আরো বলেন, বাংলাদেশে কোনো অফিস বাসায় গিয়ে ঘুষ নেয় না, ঘুষ কিন্তু অফিসে এসে দিয়ে যায়। যে দেয় সে দায়ী এবং যে নেই সেও দায়ী। ঘুষ কেন দেয় বা খায়? কারণ এতে দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের লাভ হয়।
দুদক কমিশনার বলেন- দুর্নীতি বন্ধ করার একমাত্র উপায় দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় শাস্তির বিধান করা। আপনারা দেখেছেন, যখন যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে তখনই দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং আদালত দুদককে যথেষ্ট সাহায্য-সহযোগিতা করে। এখন পর্যন্ত দুর্নীতি বিষয়ে যত মামলা হয়েছে, তার ৭০ শতাংশ এবং মানি লন্ডারিং মামলায় শতভাগ রায় দুদকের পক্ষে হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন দেশের অনেক সচিবসহ ইমপর্টেন্ট লোককে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচারের মুখোমুখি করেছে।
তিনি বলেন- দুর্নীতি দমন কমিশনের বেসিক কাজ হচ্ছে ঘুষ ও দর্নীতিবিরোধী। এই দুটি কাজ ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে কাজ করার এখতিয়ার দুদকের নেই। তিনি বলেন- সংসদে যে আইন পাস হবে তা আমাদের মানতে হবে।
জহুরুল হক বলেন- দুদক অনেক কাজ করছে কিন্তু এগুলো প্রচার হয় না, প্রচার করার মতো কোনো উইং আমাদের নেই। ভালো কাজের কথা কেউ প্রচার করে না, কিন্তু সবাই মনে করে সবখানেই ঘুষ লাগে। তিনি বলেনÑ এই গণশুনানি কাউকে হেয় বা ছোট করার জন্য নয়। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষের সমস্যাগুলো যত তাড়াতাড়ি পারা যায় সমাধান করা। তিনি বলেন- ধরুন, আপনি আমার অফিসে গেলেন টাকা দিয়ে আসলেন, আমি আপনার অফিসে গেলাম টাকা দিয়ে আসলাম তাহলে বিষয়টি দাঁড়াল সমানে সমান। মাঝখান থেকে দুজনের টাকাই হারাম হয়ে গেল। এই হারাম টাকা দিয়ে ভাত খেয়ে নামাজ হয় না, ইবাদত হয় না। তাই দুর্নীতি ছাড়তে হবে।
দুদক কমিশনার সেবা প্রদানকারীদের বলেন- যারা সেবা নিতে আসে তাদের টাকায় আপনার বেতন হয়, তার মানে আপনি তার চাকর, কাজেই তাকে সম্মান দিয়ে হয়রানি না করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তার কাজ করে দিবেন।
গণশুনানিতে অংশ নেয়া জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন- কেউ দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ করেন এবং তার একটি কপি আমাকে দিবেন, আমরা তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব। আমরা কোনো দুর্নীতিবাজকে ছাড় দিব না। আপনারা ভয় পাবেন না। দুদক আপনাদের পেছনে আছে।
এদিকে গণশুনানি চলাকালে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ভূমি-সংক্রান্ত বিষয়সহ যে কোনো বিষয়ে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে আমাকে জানাবেন, অভিযোগ সত্য হলে আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। গণশুনানিতে দুদকের কর্মকর্তা, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মসিউল করিম বাবুসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com