নিজস্ব সংবাদদাতা : দেশের ৬টি জেলায় ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ ২৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার। দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় একযোগে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
উদ্বোধনের পর পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় মেশিন, মালামাল ও সফটওয়্যার স্থাপনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণও সম্পন্ন হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন চাঁদপুর জেলা পাসপোর্ট অফিসের সুপারিন্টেনডেন্ট মো. মৃদুল ভূইয়া।
গত ১০ নভেম্বর থেকে চাঁদপুরসহ দেশের সব জেলায় ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দিয়েছিল পাসপোর্ট অধিদফতর। তবে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সেই সময়ে তা চালু করা যায়নি। দেরিতে হলেও ৬টি জেলায় একযোগে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন হচ্ছে। বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি থেকে ভার্চুয়ালি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল ৬ জেলায় ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
চাঁদপুর পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় সকল মেশিন, মালামাল ও সফটওয়্যার ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণও প্রদান করেছে ঢাকা থেকে বিশেষ টিম।
ই-পাসপোর্ট বিভিন্ন ক্যাটাগরির হবে। ৫ বছর ও ১০ বছর মেয়াদি এসব পাসপোর্টের বিভিন্ন ধরনের পৃষ্ঠার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য পাসপোর্ট অফিসের প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালক সাইদুল ইসলাম চাঁদপুর আসার কথা রয়েছে। ই-পাসপোর্টের জন্য অন্যান্য কাগজপত্রের পাশাপাশি ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আইরিশ (চোখের মণি শনাক্তকরণ) গ্রহণ করা হবে।
জেলা পাসপোর্ট অফিসের সুপারিন্টেনডেন্ট মো. মৃদুল ভূইয়া বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে খাগড়াছড়ি থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় ৬ জেলার ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ই-পাসপোর্ট আবেদনের ওয়েব লিংক খুলে দেয়া হবে। এরপর থেকে http://www.dip.gov.bd/ ওয়েবসাইটে অথবা https://www.epassport.gov.bd/landing অ্যাড্রেসে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন ই-পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা।
তিনি বলেন, এখানে আগামী সপ্তাহ থেকে ই-পাসপোর্ট সেবা মিলবে। পাসপোর্টগুলো তৈরি হবে ঢাকা থেকে। সেখানে প্রতিদিন ই-পাসপোর্টের ক্যাপাসিটি আছে ২০ হাজারের মতো। তবে সারাদেশে প্রতিদিন আবেদন পড়ছে সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার পর্যন্ত। অর্থাৎ আমাদের যে পরিমাণ ডেলিভারি দেওয়ার ক্ষমতা আছে আবেদন তার থেকে কম। সুতরাং ফি অনুযায়ী যে সময় নির্ধারণ করা আছে সে সময়ের মধ্যেই গ্রাহকরা খুব দ্রুতই ই-পাসপোর্ট পাবেন।
প্রসঙ্গত, দেশে ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন দেশের প্রথম ই-পাসপোর্ট। নিজের নামে ইস্যু করা ই-পাসপোর্ট গ্রহণ করে বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট বিতরণের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর জানিয়েছে, ই-পাসপোর্টের পাশাপাশি এমআরপিও চলবে। এই মুহূর্তে ছয় মাসের বেশি মেয়াদ রয়েছে এমন এমআরপিধারীদের ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে না। মেয়াদ শেষে এমআরপি নবায়নের জন্য আবেদন ও নির্ধারিত ফি জমা দিলেই তারা পাবেন ই-পাসপোর্ট।