বিডি ঢাকা ডেস্ক
ওরা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার সদস্য। থাকে কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের পাশের গহীন লাল পাহাড়ে। আরসার শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনা পেলেই ওরা পাহাড় থেকে নামে। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে টার্গেটের ওপর। পরে আবারো আত্মগোপনের জন্য অবস্থান নেয় সেই গহীন পাহাড়ি আস্তানায়।
বুধবার দিবাগত রাতভর সেই লাল পাহাড় থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রসহ আরসার ৩ শীর্ষ সন্ত্রসীকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান র্যাব ১৫-এর (কক্সবাজার) অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। অভিযানে ওই আস্তানা থেকে ৫টি বিদেশি পিস্তল, ২টি রিভলবার, ৬টি ওয়ান শুটার গান, ১৬টি এলজি, ৬টি এসবিবিএল, ৬৯ রাউন্ড গুলি, ৩ রাউন্ড খালি খোসা, ৫১.৭১ কেজি বিস্ফোরক এবং ২৮টি ককটেলসহ তিন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আরসার গান গ্রুপের কমান্ডার উসমান ওরফে মগবগি উসমান (৩০), কামাল হোসেনের ছেলে একই গ্রুপের শুটার ইমাম হোসেন ও আবদুস সালামের ছেলে মাঈন বিশেষজ্ঞ নেছার।
তিনি বলেন, আরসা প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনি ও মাস্টার খালেদের নির্দেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লাল পাহাড়ে আস্তানা গেড়ে সেখানে অস্ত্র মজুত করে আরসা সন্ত্রাসীর একটি গ্রুপ। আতাউল্লাহ ও খালেদের নির্দেশে সেই সব অস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করেন তারা। এই আস্তনায় ৬-৭ জনের একটি গ্রুপ অবস্থান করার খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বাকিরা অভিযান টের পেয়ে পলিয়ে যায়।
র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক সাজ্জাদ বলেন, ধৃত উসমান হলেন আরসার গান গ্রুপের কমান্ডার। গত দুয়েক মাস আগে আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার সমিউদ্দিন র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হলে পরবর্তীতে উসমানকে গান গ্রুপ কমান্ডার নিযুক্ত করে আরসা। আরসার সঙ্গে নিজের নাম লেখানোর আগে তিনি পাশের দেশে সেনাবাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে উসমানের পরিবারকে বাস্তুচ্যুত করে মিয়ানমার সরকার। তখন উসমান একটি একে-৪৭ সহ পালিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে মাস্টার খালেদের সাথে আরসায় যোগ দেন বলে জানায় র্যাব।
র্যাব ১৫-এর অধিনায়ক আরও বলেন, উসমান নিজ হাতে দুজনকে হত্যা করে। তার মধ্যে একজন হলো ক্যাম্প-১৭ এর আব্দুল্লাহ। আর কাছিমকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করেন।
নেছারকে মাইন বিশেষজ্ঞ দাবি করে র্যাব ১৫-এর অধিনায়ক বলেন, আরসার মাইন গ্রুপটি ১০ সদস্যের। এর মধ্যে নেছার হলেন মাইন বিশেষজ্ঞ। তিনি একাই পাঁচশর অধিক মাইন তৈরি করেছেন। এসব মাইন তিনি গ্রুপের সদস্যদের মাধ্যমে আরসা সদস্যদের একজনকে দু-তিনটি দিতেন নাশকতা করার জন্য। তিনি আরও বলেন, এছাড়াও গ্রেপ্তার ইমাম হোসেন দক্ষ শ্যুটার। তিনি উসমানের গান গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য।
র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।