বিডি ঢাকা ডেস্ক
বগুড়ার শিবগঞ্জে সবজির পাইকারি সবচেয়ে বড়ো বাজার মহাস্থানহাটে ক্রেতা না থাকায় হাটে ৮০ টাকা মণ অর্থাৎ ২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বেগুন।
সরেজমিনে জানা গেছে, মহাস্থান হাটে সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় সবজির পাইকারি বাজার। উত্তর অঞ্চলের সবচেয়ে পাইকারি হাট বগুড়া শিবগঞ্জের মহাস্থান। জেলায় অনেক হাট থাকলেও যুগ যুগ ধরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে মহাস্থান হাট কাঁচাবাজারের জন্য জেলার কৃষকরা এই হাটকেই বেছে নেয়।
হাটে বেগুন পর্যাপ্ত আমদানি ও দরপতনের ফলে হতাশ কৃষক। গতকাল বুধবার সকালে মহাস্থান হাটে ১০০-৮০ টাকা মণ দরে বেগুন বিক্রি হলেও দুপুর ১২টার পর বেগুন কেনার কোনো পাইকারি ক্রেতা ছিল না হাটে। তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই আড়তে বেগুন ফেলে রেখে চলে গেছেন। বাজারের আড়তদার মিজানুর রহমান বলেন, সকালে দু-একজন ক্রেতা থাকলেও দুপুরের পর আর কোনো ক্রেতা ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে কৃষকরা বেগুন ৮০ টাকা মণ বিক্রি করতে বাধ্য হয় কৃষক।
শিবগঞ্জ উপজেলার লস্করপুর গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন মহাস্থান সবজির হাটে ১০ মণ বেগুন ৮০০ টাকায় বিক্রি করেন। একই এলাকার আরেক কৃষক জয়নাল হোসেন জানান, এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষে ওষুধসহ সব মিলিয়ে খরচ হয় অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। প্রতিবার বেগুন তুলতে শ্রমিককে দিতে হয় ৪০০ টাকা।
বেগুনের হঠাৎ দরপতন নিয়ে কথা হয় মহাস্থানহাটের কৃষকদের নিয়ে গঠিত গ্রোয়ার্স মার্কেটের পরিচালক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, বুধবার হাটে বেগুন ১০০ থেকে ৮০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বেগুনের দাম ছিল ১৫০ টাকা মণ। ঢাকা, চট্টগ্রামের পাইকাররাও বেগুন কিনছেন না।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিতোশ চন্দ্র রায় জানান, এ উপজেলার মাটি খুব উর্বর। এবার আবহাওয়া অনুকূলে। যেকোনো ফসল চাষ করলে খুব ভালো ফলন দেয়। প্রতি বছরই এ অঞ্চলের চাষিরা শীতের সবজি বেগুনসহ আলু চাষে ঝুঁকে পড়েন। তবে এবার টানা বৃষ্টি না হওয়াই বীজতলা সুরক্ষিত রয়েছে। এজন্য অন্য ফসলের মতো বেগুনের ফলন ভালো হয়েছে। বেগুনের দর পতনের পেছনে হাটের কিছু মধ্যস্বত্বভোগীর (ফড়িয়া) কারসাজি রয়েছে, ফলে কৃষককে লোকসান গুণতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিত সরকার প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, কৃষি বিপ্লব শস্য ভাণ্ডার খ্যাত শিবগঞ্জ। এবার এ উপজেলায় বেগুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫০ হেক্টর জমিতে। বগুড়ার প্রায় সব উপজেলায় বেগুনের চাষাবাদ হয়। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গতবারের চেয়ে এবার বেগুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অনেক ছাড়িয়ে গেছে।