বিডি ঢাকা ডেস্ক
পাবনার বেড়া উপজেলার খাস আমিনপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে এক রাতেই ১৫টি কঙ্কাল চুরি হয়েছে। সংঘবদ্ধ চোরের দল ওই কবরস্থানের বিভিন্ন পুরোনো কবর খুঁড়ে কঙ্কালগুলো চুরি করে নিয়ে যায়। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে কঙ্কালগুলো চুরি হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পারেন। এলাকার শত শত মানুষ কবরস্থানে উপস্থিত হয়ে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এলাকাবাসী বলেন, আজ ভোরে কয়েকজন স্বজন ওই কবর জিয়ারত করতে যান। এ সময় তাঁরা কয়েকটি কবর খোঁড়া দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজনদের খবর দেন। লোকজন এসে ১৫টি কবর খুঁড়ে রাখা অবস্থায় দেখতে পান। সেগুলোতে কোনো মরদেহ ও কঙ্কালের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। এলাকাটি আমিনপুর থানাধীন। খবর পেয়ে আমিনপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
জাতসাখিনী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কালাম মণ্ডল বলেন, আজ ভোরে তিনি কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরির খবর পান। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৫টি কবর খুঁড়ে রাখা অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাৎক্ষণিকভাবে আমিনপুর থানার পুলিশকে বিষয়টি জানালে সেখানে পুলিশ পৌঁছায়।
এদিকে ঠিক কাদের কঙ্কাল চুরি হয়েছে, তা নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। কারণ, যেসব কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হয়েছে, সেগুলোর সবগুলোই কয়েক বছরের পুরোনো। এ ছাড়া ওই কবরস্থানে পাকা বা স্থায়ী কোনো কবর দেওয়া নেই।
কবরস্থানের পাশের খাস আমিনপুর গ্রামের রেখা বেগম ফজরের নামাজের পর কবর জিয়ারত করতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘সাহ্রি খেয়ে ফজরের নামাজ আদায় করে প্রতিদিনের মতো আজও ভাইয়ের কবর জিয়ারত করতে গেছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি, একটি ট্রাক কবরস্থানের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখেই কবরস্থানে থাকা কালো কাপড় পরা ছয় থেকে সাতজন বস্তা নিয়ে তড়িঘড়ি করে ট্রাকে উঠে পালিয়ে যায়। আমি কিছুটা ভয় পেয়ে বাড়ি চলে আসি। এখন শুনতেছি কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরি হইছে।
এদিকে কঙ্কাল চুরির খবর পেয়ে এলাকার শত শত মানুষ কবরস্থানে গিয়ে ভিড় করেন। বেশ কয়েকজন স্বজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মহাসড়কের পাশের এই কবরস্থান থেকে এভাবে কঙ্কাল চুরির ঘটনা এ এলাকায় আগে কখনো ঘটেনি। এটা আতঙ্কিত হওয়ার মতো একটি ব্যাপার।
খাস আমিনপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবুল উদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের কবরস্থান থেকে ১৫ থেকে ১৬টি কঙ্কাল চুরি হয়েছে। কাদের স্বজনের কঙ্কাল চুরি হয়েছে, তা আমরা এখনো শনাক্ত করতে পারিনি। তবে এ ব্যাপারে আমরা পুরোনো রসিদ দেখে কবরগুলোয় দাফন করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’
বেড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মেজবাহ-উল-হক বলেন, ‘কঙ্কাল চুরির ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে এলাকাবাসী। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-উর রশীদ বলেন, ‘ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। ১৫ থেকে ১৬টি কবরের কঙ্কাল চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া কবরগুলো ঠিক কাদের, তা শনাক্তের চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার জোর চেষ্টাও চলছে। আর এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।’