বিডি ঢাকা ডেস্ক
রাজশাহীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের একটি ১৭ কোটি টাকার টেন্ডার ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত নভেম্বরে সম্পন্ন হওয়া ওই টেন্ডারের ২৩টি গ্রুপের কাজের মধ্যে ১৬টি গ্রুপের কাজই পেয়েছেন ঢাকার একজন ঠিকাদারের অধিনে থাকা দুটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ১১টি গ্রুপের কাজ পেয়েছেন এসএম এন্টার প্রাইজ নামের ঠিকাদারী একটি প্রতিষ্ঠান।
আর ৫টি কাজ পেয়েছে কথা এন্টার প্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। দুটি প্রতিষ্ঠানের সত্তাধিকারী হলেন ঢাকার ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ এবং তাঁর সহযোগী সিরাজুল হক ভুঁইয়া। তাঁরা দুজনে যৌথভাবে ব্যবসা করেন। এ নিয়ে রাজশাহীর ৭ জন ঠিকাদার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ ঢাকার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এসএম এন্টারপ্রাইজ এবং কথা এন্টারপ্রাইজকে বিগত ২০২০-২০২৪ অর্থ বছরের এক নোটিশে ২৩টি গ্রুপের কাজের মধ্যে ১৬টি গ্রুপের কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। ১৭ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি টাকার সাব মার্সিবল বসানোর কাজ গোপনে প্রাক্কলন মূল্য ফাঁস করে দিয়ে প্রকৌশলী তাঁর বন্ধুর প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করছেন। তাঁর এই দুর্নীতিটির তদন্ত করলেই প্রমাণ মিলিবে। তাঁর দুর্নীতির কারণে করে জনস্বাস্থ প্রকৌশলী অধিদপ্তরের রাজশাহীর স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।বিক্ষুব্ধ ঠিকাদারদের অভিযোগ, এর আগেও জনস্বাস্থ প্রকৌশলী অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ যেখানেই পদায়ন হয়েছেন, সেখানেই তাঁর বন্ধু ও মিতা হারুনুর রশিদ একের পর এক কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। তিনি রাজশাহীতে যোগদানের পর থেকেও কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে একক সিদ্ধান্তে অফিস গোপনে দরপত্রের প্রাক্কলন মূল্য ফাঁস করে দিয়ে তাঁর বন্ধুকে কাজ পাইয়ে দিচ্ছেন।সোহাগ নামের এক ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, ‘গোপনে প্রাক্কলন মূল্য কোনো ঠিকাদারকে না দিলে একজনের পক্ষে ১১টি গ্রুপের কাজ পাওয়া সম্ভব না। ২৩টি গ্রুপের কাজের মধ্যে কিভাবে ১৬টি কাজ একই ঠিকাদারের অধিনে থাকা দুটি প্রতিষ্ঠান পাই, সেটি তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। আমরা এই অনিয়মের বিচার চাই। সে কারণে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য লিখিত অভিযোগ করেছি।’তবে এ নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এর আগের বছরেও ১৯টি গ্রপের কাজ একই ঠিকাদার পেয়েছে বলে আমি জানি। ঠিকাদাররা একজোট হয়ে এক প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ দিলে আমার কি করার আছে। তবে এসএস এন্টার প্রাইজ ও কথা এন্টার প্রাইজের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। আমি কোনো প্রাক্কলন মূল্যও তাদের দেয়নি।’আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘ঠিকাদাররা কাজ না পেলে অভিযোগ করবে-এটাই স্বাভাবিক। তবে এখানে একটি সিন্ডিকেট আছে। তারাই টেন্ডারগুলো নিয়ন্ত্রণ করে বলে মনে হচ্ছে।’