বিডি ঢাকা ডেস্ক
রাজশাহীতে ‘সাহিত্য ভাবনায় জুলাই বিপ্লব ও দ্রোহের কবিতা পাঠ’ শিরোনামে বিশেষ আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে পরিচয় সংস্কৃতি সংসদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহী কলেজ শাখা। দেশজুড়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য প্রতিরোধে সাহিত্য এবং সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরতেই এ আয়োজনে সম্মিলিত হন শিক্ষক, সাহিত্যিক এবং কবিরা।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আলী রায়হানের পিতা মোসলেম উদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আরেক শহীদ সাকিব আনজুমের পিতা মাইনুল হক। সভার সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ড. আবু নোমান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ যহুর আলী।
বিশেষ অতিথির আসন অলংকৃত করেন রাজশাহী কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইব্রাহিম আলী, বিশিষ্ট কথাশিল্পী ডা. নাজিব ওয়াদুদ, অধ্যাপক ড. শিখা সরকার এবং কবি সায়ীদ আবু বকর। তাদের উপস্থিতি এ অনুষ্ঠানে এক নতুন মাত্রা যোগ করে, যা শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের জন্য প্রেরণাদায়ক হয়ে ওঠে।
আলোচকরা তাদের বক্তব্যে দেশের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আধিপত্যবাদকে মোকাবিলা করতে লেখালেখির শক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা বলেন, সাহিত্য কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়; এটি একটি সামাজিক অস্ত্র হিসেবে কাজ করতে পারে। স্বাধীন মতপ্রকাশের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী সচেতনতা গড়ে তোলার এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাহিত্য একটি কার্যকর হাতিয়ার।
বক্তারা বলেন, আজকের বাংলাদেশকে একটি বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে আমাদেরকে জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। এই চেতনা আমাদের মধ্যে দ্রোহের শক্তি এনে দেয়, যা থেকে সমাজের প্রতি প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব। তারা সাহিত্যিকদেরকে আহ্বান জানান, যেন তারা সমাজের বিভিন্ন অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কলম ধরেন এবং এ বিষয়ে তাদের সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে সমাজকে সচেতন করেন।
আলোচনা সভার শেষে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা দ্রোহের কবিতা পাঠ করেন, যা সভায় এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। কবিতাগুলোতে দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিবিম্ব তুলে ধরা হয়। এতে উপস্থিত শ্রোতারা নতুনভাবে সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব অনুধাবন করেন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আরও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের অনুপ্রেরণা পান।
এই আয়োজন রাজশাহীর সাহিত্যাঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা আগামী দিনে আরো শক্তিশালী ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।