বিডি ঢাকা ডেস্ক
রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন ফেতরাপাড়া এলাকাস্থ কাশিয়াডাঙ্গা ফেতরাপাড়া জামে মসজিদের অদূরে টুটুল ভাটা ওয়ালার বাড়ির সামনে অবস্থিত সোহাগ হাজী (পুকুর মালিক)’র পুকুর (শওকতের ভাটার পুকুর নামে পরিচিত) ও নগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন লিচুবাগান এলাকায় (রেটিনা কোচিং সেন্টারের গলিতে) উদয়ন কোচিং সেন্টারের সামনের বিশাল আকৃতির পুকুর পুকুর ভরাট বন্ধ, সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১ টায় এ স্মারকলিপি প্রদান করে ‘তারুণ্যের জয় হবে নিশ্চয়ই’ এ প্রত্যয়ে এগিয়ে চলা রাজশাহীর গবেষণাধর্মী যুব ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস।
ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস’র সভাপতি মো. শামীউল আলীম শাওন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক যৌথ স্বাক্ষরিত ৭ দফা দাবী সম্বলিত এ স্বারকলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার কে প্রদান করা হয়েছে। পৃথক স্মারকলিপি রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এবং স্বারকলিপির অনুলিপি পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজশাহীর উপ-পরিচালক মাহমুদা পারভীন এবং রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে জিইপি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্মারকলিপির অন্যতম দাবীসমূহ হলো- শওকতের ভাটার পুকুর ও লিচুবাগান পুকুর ভরাট বন্ধ, সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার করতে হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে পুকুর ভরাট করার সাথে সম্পৃক্ত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; ব্যক্তি মালিকানাধীন সকল পুকুর, জলাশয়, জলাধারগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে, প্রয়োজনে অধিগ্রহণ করতে হবে। অধিগ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত পুকুর, জলাশয়, জলাধারগুলোর মালিকগণকে প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। শহরের পুকুর, জলাশয়া-জলাধার সংরক্ষণার্থে ব্যক্তি মালিকানাধীন এসব জলাভূমির জন্য প্রণোদনা বরাদ্দ এবং ভবিষ্যতে অধিগ্রহণের নীতিমালা প্রণয়ন বর্তমান বাস্তবতায় করতে হবে; রাজশাহীর সকল পুকুর, জলাশয়, নদী-নালা, খাল-বিল, ঝিল, লেক, জলাভূমি, প্লাবনভূমি, বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার করতে হবে। সংস্কার সংরক্ষণ, সৌন্দর্য্য বর্ধনের নামে পুকুর, জলাশয়, জলাধারগুলোর প্রকৃত আকার-আকৃতি বিনষ্ট ও প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করা বন্ধ করতে হবে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে হবে; নগর পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ, জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধিকরণ এবং সৌন্দর্য বর্ধনে পুকুর, জলাশয়, জলাভূমিগুলোকে প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণ ও নতুন পুকুর, জলাশয়, জলাভূমি সৃজন করতে হবে এবং বৈশ্বিক মানদন্ড অনুযায়ী নগরে শহরের মোট ভূমির ১০ থেকে ১২ শতাংশ এলাকা জলাশয় ও ১৫ শতাংশ বনভুমি নিশ্চিত করতে হবে; পুকুর, জলাশয়, জলাভূমি ভরাট, দখল-দূষণ ও ভূমির (জলাভূমি) শ্রেণী পরিবর্তন কঠোরভাবে দমন করতে হবে; পুকুর, জলাশয়, জলাভূমি সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করতে হবে; পুকুর, জলাশয়, জলাভূমি ভরাট বন্ধ করতে হবে; ইতোমধ্যে ভরাটকৃত পুকুর জলাশয়, জলাভূমি পুনরুদ্ধারসহ পুকুর, জলাশয়, জলাভূমির জীববৈচিত্র্য এবং প্রাণিসম্পদসহ পরিযায়ী পাখির আবাসস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০, পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন ২০১০, জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮ এর যথাযথ বাস্তবায়ন ও কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং উচ্চ আদালত কর্তৃক রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় থাকা ৯৫২টি পুকুর সংরক্ষণসহ উচ্চ আদালতের ৫ দফা নির্দেশনা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এছাড়াও একই দাবী সম্বলিত চিঠি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড. মুহাম্মদ ইউনুস, প্রধান উপদেষ্ঠার মূখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হাসান আরিফ, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) চেয়ারম্যান এস. এম. তুহিনুর আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোয়ালিয়া অভিজিৎ সরকারকে প্রেরণ করা হয়েছে।